১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ - 26 April, 2024
amader protidin

রংপুর থেকে বগুড়া-রাজশাহী রুটে বাস চলাচল বন্ধ, চরম বিপাকে যাত্রীরা

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
438


ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী-বগুড়া রুটে রংপুর থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এতে রাজশাহীগামী যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এর আগে রাজশাহী সড়ক পরিবহন কার্যালয়ে বুধবার (৩০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এক যৌথসভা শেষে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব এ ঘোষণা দেন। তার ঘোষণার পরেই বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) থেকে রংপুর থেকে রাজশাহী-বগুড়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগরীর কেন্দ্রীয় সিটি বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী রুটের বেশির ভাগ যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। কাউন্টারগুলো থেকে বন্ধ রয়েছে টিকিট বিক্রি। শ্রমিকেরা অলস সময় পার করছেন। তবে রংপুর বিভাগের আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। 

এর আগে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন, মহাসড়ক বা আঞ্চলিক মহাসড়কে অবৈধ ত্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ, ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন ও পুলিশি হয়রানি বন্ধ করাসহ ১০ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে রাজশাহীসহ বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ রয়েছে। ওই কর্মসূচিকে ঘিরেই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব জানান, গণসমাবেশের সঙ্গে তাদের ডাকা ধর্মঘটের কোনো যোগসূত্র নেই। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সময়ে তারা সংগঠনের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরে আন্দোলন করে আসছে। একই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী রুটে ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।

নগরীর মর্ডাণ এলাকায় কথা হয় আমজাদ হোসেন ও সাজু মিয়ার সাথে। তারা বলেন, আমাদের বাড়ি হারাগাছ এলাকায়। ব্যবসায়ীক কাজে বগুড়া যাবার জন্য এসে শুনি বাস বন্ধ। রংপুর থেকে নাকি বগুড়া-রাজশাহীর কোন বাস যাচ্ছে না। এতে অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো।

টার্মিনাল এলাকার সাইফুল ইসলাম নামের এক যাত্রী জানান, হঠাৎ হঠৎ শুনি পরিবহন ধর্মঘট। এতে সরকারের তো কোনো ক্ষতি হয় না। মালিক-শ্রমিকরা যদি কথায় কথায় হরতাল-ধর্মঘট দেয়, তাইলে আমাদের মত গরীব মানুষ কেমন করে বাঁচবে? সরকারের উচিত গরিব মানুষের কথা চিন্তা করা।’

অন্যদিকে রংপুরে কেন্দ্রীয় বাস সিটি টার্মিনাল ছাড়াও নগরীর মডার্ন মোড়, মিঠাপুকুরের জায়গীরহাট বাসস্ট্যান্ড, বলদিপুকুর বাসস্ট্যান্ড, পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও লালদিঘী থেকে রাজশাহী রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে অনেকেই ছোটো ছোটো যানবাহন ও থ্রি-হুইলারে করে ভেঙে ভেঙে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে চেষ্টা করছেন। যদিও এতে বাসের চেয়ে অন্য বাহনে ভাড়ার হিসেব নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

সিটি বাস টার্মিনালে কথা হয় রংপুর-নাটোর-পাবনা রুটে চলাচল করা বসুন্ধরা বিজনেস ক্লাস পরিবহন, রংপুর-ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা রুটের বাহন পরিবহন, বগুড়া-নাটোর-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ-যশোর রুটের ওবাহে এক্সপ্রেসসহ বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী পরিবহনের  শ্রমিকদের সঙ্গে।

ধর্মঘট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারা জানান, রাজশাহী-বগুড়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রংপুর থেকে বাস চলাচল করছে না। এটার সঙ্গে রংপুরের মালিক বা শ্রমিকদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন তারা।

এদিকে রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফতাবুজ্জামান লিপ্পন বলেন, রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রংপুর থেকে রাজশাহী-বগুড়ামুখী বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ঢাকাগামী বাসসহ আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কবে নাগাদ ধর্মঘট শেষ হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়