১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ - 27 April, 2024
amader protidin

কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
377


নবান্নের পর আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক
দিনাজপুরে কমেছে ধানের দাম

একরাম তালুকদার, দিনাজপুর: 

ধানের জেলা দিনাজপুরে আমন ধান কাটা-মাড়াই মৌসুমের শুরুতে ভালো পাওয়ায় কৃষকরা বেশ উৎফুল্ল হলেও পুরোদমে কাটা-মাড়াই শুরু হওয়ার পর এখন কৃষকদের মধ্যে বিরাজ করছে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা। পুরোদমে আমন কর্তন শুরু হওয়ায় বাজারে বেড়েছে ধানের সরবরাহ। আর সরবরাহ বৃদ্ধির সাথে সাথে বাজারে কমতে শুরু করেছে আমন ধানের দাম। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি ধানের দাম কমেছে এক থেকে দেড়’শ টাকা। এই দাম আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এতে শুরুতে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটলেও এখন চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে কৃষকদের কপালে।

দিনাজপুর সদর উপজেলার অন্যতম বৃহৎ ধানের বাজার গোপালগঞ্জ হাটে সোমবার (২১ নভেম্বর) গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবস্তা (৭৭ কেজি) বিআর-৫১ জাতের ধান ২ হাজার ৩৫০ টাকা, বিআর-৪৯ জাতের ধান ২ হাজার ৫৫০ টাকা, গুটি স্বর্ণ ২ হাজার ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ আগে বিআর-৫১ জাতের ধান প্রতিবস্তা ২ হাজার ৫শ টাকা, বিআর-৪৯ জাতের ধান ২ হাজার ৬৪০ টাকা এবং গুটি স্বর্ণ ধান বিক্রি হয় ২ হাজার ৩৭০ টাকা পর্যন্ত। অর্থ্যাৎ কয়েকদিনের ব্যবধানে বাজারে ধানের দাম কমেছে বস্তা প্রতি (৭৭ কেজি) ১ থেকে দেড়শ টাকা। পাশাপাশি বাজারে চিকন ধানের দামও কমতে শুরু করেছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে প্রতিবস্তা ৯০ জিরা ধান ৪ হাজার ৩’শ টাকা থেকে নেমে ৪ হাজার ১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সোমবার গোপালগঞ্জ বাজারে ধান কিনতে আসা জিল্লুর রহমান জানান, তিনি বাজারে ধান কিনে সরবরাহ করেন পুলহাটের এক অটো রাইস মিলে। মিল মালিকরা যেভাবে দাম জানিয়ে দেয়, তাদেরকে সেই দামেই ধান কিনতে হয়। তিনি জানান, বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার কারনে মিল মালিকরাও দাম কমিয়ে দিয়ে। এ কারনেই গত কয়েকদিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি ১ থেকে দেড়শ টাকা।

জিল্লুর রহমান জানান, গত এক হাটের ব্যবধানে গোপালগঞ্জ ধানের হাটে আমন ধানের ব্যাপক সরবরাহ বেড়েছে। গত শুক্রবার এই হাটে ধান উঠেছিলো ১ হাজার বস্তার মতো। কিন্তু সোমবার এই হাটে ধান উঠে ৩ হাজার বস্তারও বেশী। অর্থ্যাৎ কয়েকদিনের ব্যবধানে হাটে তিন গুন বেশী সরবরাহ বেড়েছে।

ধানের দাম কমতে শুরু করায় কৃষকদের মধ্যে বিরাজ করছে শংকা। সেমাবার গোপালগঞ্জ হাটে ধান বিক্রি করতে আসা তুষার চন্দ্র রায় নামে এক কৃষক জানান, এবার কৃষি উপকরনের দাম বেশী ছিলো। তাই আমন ধানের উৎপাদন খরচও বেশী পড়েছে। প্রথম অবস্থায় যখন বাজারে ধানের দাম বেশী ছিলো, এতে তারা বেশ খুশী ছিলো এবং এবার আমন আবাদে লাভের স্বপ্ন দেখছিলো। কিন্তু এই দাম আরও কমলে লোকসান গুনতে হবে তাদের। এ নিয়ে শংকা আর উৎকন্ঠায় রয়েছেন তারা। 

এদিকে দিনাজপুর জেলার গ্রামাঞ্চলে এখন পুরোদমে চলছে আমন ধান কাটা-মাড়াই। নবান্নের পর জমির আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান জানান, দিনাজপুর জেলায় চলতি আমন মৌসুমে মোট ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৩২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ৪০ শতাংশ ধান ঘরে তুলেছে কৃষকরা। তিনি বলেন, জেলায় এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, তাই গতবারের চেয়ে এবার বেশী পরিমান চাল উৎপন্ন হবে দিনাজপুর জেলায়।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়