সাবেক প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গা ও তার স্বজনরা ক্ষমতার জোরে সৌকত পরিবহন ব্যবসা জবরদখলের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা ও তার স্বজনরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে রংপুরের হারাগাছ এলাকার পরিবহন ব্যবসায়ী ফজল এ খোদা বাপ্পীর সৌকত পরিবহন ব্যানার জবরদখল করে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ভোগ করে বাপ্পীকে নিঃস্ব বানিয়ে এলাকাছাড়া করেছিল।আজ ২৮ ডিসেম্বর (শনিবার) দুপুরে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাপ্পী এসব অভিযোগ করেন।
প্রেসক্লাব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বাপ্পী আরো বলেন, আমার জন্ম হারাগাছে হলেও কৈশোর ও যৌবন কেটেছে ঢাকায়। ২০০১ সালে আমি হারাগাছে এলে পরিচয় হয় তৎকালীন রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতির সড়ক সহ-সম্পাদক মোত্তালেব হোসেন বাদলের সাথে। তার পরামর্শ ও সহযোগীতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি ২০০১ সালে তাকে সাথে নিয়েই পরিবহন ব্যবসা শুরু করি। আমার ব্যনারের নাম রাখি সৌকত পরিবহন। এর লোগোতে রয়েছে আরএনআর।
শুরুতেই গঙ্গাচড়া উপজেলা-ঢাকা রুটে ও ২০০৪ সালে পীরগাছা উপজেলা-ঢাকা রুটেও যাত্রী পরিবহন করি। যা পর্যায়ক্রমে নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম জেলার কিছু রুট হতে ঢাকা পর্যন্ত সম্প্রসারন করি। ২০০৪ সালে রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতি কর্তৃক "মেসার্স আর.এন.আর সৌকত পরিবহন কোং" নামক ব্যানারে যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলের সিরিয়াল এবং ২০০৫ সালে রুট দু'টিতে যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলের অনুমোদন প্রাপ্ত হই। পাশাপাশি ২০০৫ সালে রেজিষ্ট্রার্ড অব ট্রেডমার্কস ঢাকা থেকে "আর.এন.আর সৌকত পরিবহন কোং" নামক ব্যানারভূক্ত গাড়ী চলাচলে রেজিষ্ট্রেশনের জন্য আবদেন করি। যা গত ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে অনুমোদিত হয়। যার ট্রেডমার্কস জার্নাল নং-৩৩০, ক্লাস ৩৯, পৃষ্ঠা নং-৪৭১৪৬ ও ৪৭১৪৭।
আমার পরিবহন ব্যবসার সাফল্যে ঈশ্বাম্বিত হয়ে পড়ে আমার সহযোগী লোভী মোত্তালেব হোসেন বাদল। সে আমার অজ্ঞাতে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতির সেক্রেটারী, তৎকালীন রংপুর-১ আসনের এমপি ও জাতীয় পার্টির নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গার ভগ্নিপতি হাফিজুল ইসলাম দুলুকে সাথে নিয়ে যৌথভাবে আমার ব্যানারকৃত নাম "আর.এন.আর সৌকত পরিবহন" ব্যবহার করে ভুরুঙ্গামারী হতে ফেণী পর্যন্ত গাড়ী চলাচলের অনুমতি চেয়ে কুড়িগ্রাম জেলা মটর মালিক সমিতিতে আবেদন করে। বিষটি আমার নজরে এলে আমি আমার পরিবহন ব্যবসার যাবতীয় দায়িত্ব থেকে মোতালেব হোসেন বাদলকে সরে যেতে বলি। ফলে তখন থেকেই তার সাথে আমার অন্তঃদ্বন্দ্ব তৈরী হয়। যা পরবর্তীতিতে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে রূপ নেয়। ২০০৯ সালে মসিউর রহমান রাঙ্গা প্রতিমন্ত্রী হলে তার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে তারই নির্দেশে বাদল ও দুলু আমার পরিবহন ব্যবসার গাড়ীগুলো আটক করে আমার ও আমার পরিবহন ব্যবসার বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরূদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যে মামলা দায়ের করে হয়রানী করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আমার পরিবহন ব্যবসা জোর পূর্বক নিজেদের দখলে নিয়ে ভোগ করতে থাকে। এর পরও তারা চুড়ান্তভাবে আমাকে ধ্বংসের জন্য হত্যারও পরিকল্পনা নেয়। ফলে আমি জীবন বাঁচাতে পরিবার পরিজন নিয়ে পরিবহন ব্যবসার আশা ছেড়ে ঢাকায় আত্মগোপনে থাকি দীর্ঘ ১৫ বছর। সরকারের পালাবদলের পর সম্প্রতি আমি আমার মালিকানাধিন সৌকত পরিবহন ফিরে পেতে ও জুলুমবাজদের শাস্তির দাবীতে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে হাফিজুল ইসলাম দুলু জানান, আমরা আমাদের ব্যানারে গাড়ী চালাচ্ছি। বাপ্পীর ব্যনার জবরদখল করি নাই।
একই বিষয়ে মোত্তালেব হোসেন বাদল জানান, বাপ্পীর অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যে। যা আমাদেরকে হেয় করার জন্য করছে।