ভিতরে গাছ এবং খুটি রেখে করা হয়েছে এলজিইডি'র রাস্তার কাজ
আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ রংপুর:
পীরগঞ্জের এলজিইডি রাস্তার মাঝখানে একাধিক গাছ এবং কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সড়ক প্রশস্ত ও পাকা করার কাজ চলছে। রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য রাস্তার দুই পাশে গাছ কর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত নাকরেই শুরু হয়েছে পাকা করনের কাজ। পথচারী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের মাঝখানেই গাছ ও খুঁটি রেখেই পাকা করনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে যানবাহনের চালক ও স্থানীয়রা বলছেন।
উপজেলা বোন অফিসার মিটু তালুকদার বলছেন রাস্তার গাছ কর্তনের বিষয়টি নিয়ে কাগজপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলেই টেন্ডারের দেয়া হবে গাছ।
বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন বলছেন, বিদ্যুৎ এর খুটি অপহরনের জন্য যোগাযোগের প্রয়োজন হয়। যোগাযোগ করা হলেই সরানো হবে বিদ্যুৎ এর খুটি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন বলছেন, গাছ এবং খুটি রেখেই টেন্ডার দেয়া হয়েছে । নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। তাছাড়া গাছ এবং খুটি অপহরনের বিষয়টি দেখবে উপজেলা এলজিইডি বিভাগ।
সিএনজি চালক রফিকুল ইসলাম বলছেন, কনটাকটার কাজ শুরু করেছে প্রায় কয়েক মাস আগে। এই রাস্তায় অনেক মোড় রয়েছে তারপরও রাস্তার মধ্যে গাছ রেখে কাজ করা হচ্ছে। যে কোনো সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও পল্লী বিদ্যুৎ এর কয়েকটি খুটিও রয়েছে। ট্রাক যাতায়াত করলে ভ্যান ও সিএনজি চালকদের সব সময় সতর্কের মধ্যে থাকতে হয়। রাস্তা (বাড়িয়ে দেয়া ) বা প্রশস্ত করা হয়েছে এতে সকলের সুবিধা হবে। বিদ্যুৎ এর খুটি এবং গাছ দেখে পথচারী ও এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, রাস্তার মাঝে খুটি বা গাছ রেখে রাস্তা পাকা করা হচ্ছে । এটা যুক্তিযুক্ত নয়। এতে যে কোন সময়ে খুটি এবং গাছের কারণে মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অতি দ্রুত এই গাছ এবং খুটিগুলো অপসারণ করা দরকার। সকাল থেকেই হাজারো মানুষ, স্কুল , কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে এই পথে । দূর্ঘটনা ঘটার আগেই সমস্যা সমধান করা প্রয়োজন।
একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, জাহাঙ্গীরাবাদ বাজারে বিদ্যুৎ এর খুটি এবং হাইস্কুলের সামনেই গাছ রেখেই পাকা করা হয়েছে রাস্তা। দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুতের এই খুটি এবং গাছ সরানো খুবই জরুরি। তাছাড়াও এ এলাকায় স্কুল পড়ুয়া অধিকাংশ মেয়েরা বাইসাইকেল নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। বড় ধরনের যানবাহ দেখলেই সাইকেল থেকে নেমে যেতে হয়। তাই তারাও খুটি এবং গাছ সরানো বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজর দেয়ার দাবি জানান।
শানেরহাট হয়ে রহমতপুর ভায়া বৈরাগীর বাজার পর্যন্ত এমএজেড এসবি (জেভি) জুম্মার পাড়া, সদর, রংপুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ১২.৫৬০ মিটার এলজিইডি রাস্তা ২০ কোটি ৭৯ হাজার ৬ শত ৩৬ টাকা ব্যায়ে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে মধ্যে কাজ সম্পন্ন করবেন ঠিকাদার।
এলাকার স্কুল শিক্ষকরাও রাস্তার উপর খুটি এবং গাছ সরানোও বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন।
২০১২ সালে উক্ত রাস্তায় প্রায় ১২ হাজার গাছের চারা রোপণ করেন জাহাঙ্গীরাবাদ এসো গড়ি সমাজ বহুমুখী সমবায় সমিতি। গাছ নিয়ে কথা হয় উক্ত সমিতির সভাপতি মেহেদুল ইসলাম মিদুল এর সাথে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক রেজুলেশন করে আমরা অই রাস্তায় বৃক্ষ রোপণ করি। কাগজপত্র অনুযায়ী গাছ কাটার সময় পার হয়েছে,সমিতির লোকজন উপজেলা বোন অফিসার কে গাছ কাটার জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে। সেই মোতাবেক অফিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করেছে। টেন্ডার হলেই গাছ কাটা হবে।
তিনি আরও বলেন, রাস্তার প্রশস্ত করা কারনে অনেক গাছ রাস্তার ভিতরে পরেছে। তাছাড়াও রাস্তার কাজের কারনে শতাধিক গাছ মারা গেছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। তাদের কাজের কারনে দুই পাশের বেশকিছু গাছ মারা গেছে। সরু রাস্তার দুই পাশে গাছ রোপণ করেছে এলাকার লোকজন সংগঠনের মাধ্যমে। এখন রাস্তার বেড়ে দেয়া হয়েছে সেই কারনে কিছু গাছ রাস্তার ভিতর পরেছে। তবে গাছগুলো জরুরি ভাবে
টেন্ডা দিয়ে কাটা প্রয়োজন। গাছ টেন্ডার না হলে সরকার এবং সংগঠনের লোকসান হবে। মরা গাছ রাস্তা থেকেই ক্ষয় হয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গাছ কাটতে গেলে অনেক সময়ের ব্যাপার তাছাড়া কাগজপত্রের কাজ ঠিকঠাক করা হচ্ছে। কাগজপত্রের কাজ সম্পন্ন হলেই গাছ কাটার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। একই ভাবে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনের সাথে কথা হয়েছে খুটিও অপসারণের ব্যবস্থা নেবে বিদ্যুৎ অফিস।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম জানান , রাস্তার ভিতর গাছ এবং খুটির রয়েছে বিষয়টি আমি জানিনা। এলজিইডি অফিসের সাথে কথা বলে সমাধান করা হবে।