২৭ আশ্বিন, ১৪৩২ - ১২ অক্টোবর, ২০২৫ - 12 October, 2025

ঝড়ে লন্ডভন্ড ঘরবাড়ি ৭দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে প্রতিবন্ধী লালমিয়া

2 hours ago
50


সিএসএম তপন,নীলফামারী: 

আমি বিছানায় ঘুমের মধ্যে ছিলাম হঠাৎ সকালের তীব্র ঝড়ে টিনের ঘর উঠে গেলো লন্ডভন্ড হয়ে গেলো ঘরবাড়ি। পরিবার নিয়ে কোনমতে বেঁচে আছি এখন থাকার জায়গাটা টাকার অভাবে ঠিক করতে পারছিনা কান্নাজড়িত কন্ঠে এমন কথা বলছিলেন লালমিয়া।  

শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে নীলফামারীর গাড়াগ্রাম এলাকার পশ্চিম দলিরাম বানিয়াপাড়া এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। লালমিয়া ওই এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে ও দুই সন্তানের  জনক। 

ঝড়ে প্রায় সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেছে লালমিয়ার। ঘরের টিনের চালা উঠে গিয়ে পড়ে আছে অন্য জায়গায়। বিছানায় জমে গেছে ময়লা আর্বজনা এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র। খোলা আকাশের নিচে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে করছেন যাত্রীযাপন। দিন পার হলেও কাটেনি লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার ক্ষতস্তুপ। 

জানা যায়, লালমিয়া শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় কোন ধরনের কাজ করতে পারেনা। তার স্ত্রী স্থানীয় একটি কারখানা  শ্রমিকের কাজ করে চালান পরিবার ও সন্তানের পড়ালেখা। যেখানে তিনবেলা খাবার জুটানো কষ্টসাধ্য ব্যাপার সেখানে ঘরবাড়ি মেরামত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড থাকায় স্কুলে যেতে পারছেনা তার চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে। আগে তিনবেলা খাবার পেলেও এখন স্ত্রী কারখানায় কাজে না যাওয়ার কারনে ঠিকমতো মিলাতে পারছেনা খাবার।

লাল মিয়া আরও বলেন, আমি প্রতিবন্ধী মানুষ কোন কিছু করতে পারিনা। পরিবারে আমার অসুস্থ বাবা রয়েছে দুই সন্তান রয়েছে তাদের জন্য কিছু করতে পারিনা। আমার স্ত্রী পাশের একটি কারখানায় দিন মজুরের কাজ করে সেখানে কাজ করে তিনি পরিবার চালায় কিন্তু সবকিছু একসাথে ভেঙে যাওয়ায় আমাদের পক্ষে সেটি মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। আশপাশের লোকজনের কাছে সমস্যা হলে সহায়তা নিয়ে চলি কিছু সবার ঘরবাড়ি উঠে গেছে সবাই কাজ করছে কে আমাকে এ সময়ে সহায়তা করবে। ৭দিন থেকে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আছি সমাজের কেউ সাহায্য করলে আমরা ঘরবাড়ি মেরামত করতে পারব৷

লালমিয়ার স্ত্রী আনুফা বেগম বলেন, আমার দুই সন্তান রয়েছে স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধী তিনি কোন কাজ করতে পারেনা আমি একটি কারখানায় দিন মজুরের কাজ করে পরিবার চালাই। ঝড়ে আমাদের ঘরবাড়ি উড়ে যাওয়ার কারনে সাতদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে আছি। রাতে ঘুমাতে পারিনা এসময়ে কুয়াশা পড়ে শরীর ভিজে যায়। ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে আমার সন্তানের কাপড় বইখাতা সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সেও স্কুলে যেতে পারছেনা। আমার নিরুপায় হয়ে গেছি কিছু ঠিক করতে পারিনা সমাজের মানুষ যদি আমাদের পাশে দাড়ায় আমরা ঘর ঠিক করে থাকতে পারব। 

স্থানীয় বাসিন্দা মিষ্টার রহমান বলেন, আমাদের এলাকার মধ্যে সবথেকে গরীব মানুষ লালমিয়া তিনি প্রতিবন্ধী । তার পরিবারে যারা আছেন তাদেরকে তার স্ত্রী কাজ করে দেখা শোনা করে। হঠাৎ ঝড়ে তার ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে একটি টিনের ঘর ছিলো সেটিও ভেঙে পড়ে আছে। সবকিছু ভেঙে যাওয়ায় তারা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। প্রশাসন তাদের সহায়তা করলে তারা ঘরবাড়ি ঠিক করতে পারবে।

গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জোনাব আলী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি পরিবাকে সহায়তা করার চেষ্টা করব।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রীতম সাহা বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারকে উপজেলা প্রশাসন থেকে শুকনো খারাপ ত্রিশ কেজি চাল ও বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হয়েছে। এ পরিবারটির বিষয় জানলাম তাদের সহায়তা করার ব্যবস্থা করা হবে।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth