কৃষকের পকেট গরম করছে পানি ফল
আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ রংপুর:
বছরে একবার ধানের চাষ করা হয় আর সেই জমিতে জৈষ্ঠ্যমাসে পানি ফলের বীজ বুনিয়ে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। রোপা আমন ধান জলাবদ্ধতায় ডুবে যায়। সেই জলাবদ্ধতার জমিতে এখন বিকল্প ভাবে পানি ফলের চাষ কারা হচ্ছে। অনেকেই ভাগ্য বদলে দিয়েছে এই ফল। এলাকায় নতুন নতুন করে এই ফলের চাষাবাদে অংশ নিচ্ছে কৃষক।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়ন ঘুরে কথা হয় শয়েকপুর গ্রামের পানি ফল চাষি শ্রী পরিমল এর সাথে তিনি বলেন, ৩৩ শতক বিলের পানিতে বীজ বপন করে ২০ হাজার টাকার পানি ফল বিক্রি করেছে,আরও জমিতে ফল আছে। তবে পানি যতদিন থাকবে ততদিন ফলও পাওয়া যাবে বলে তিনি ধারণা করছেন।
একই এলাকার বামনীর বিলে ৭০ শতক জমিতে পানি ফলের চাষ করে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেছে জাহাঙ্গীরাবাদ গ্রামের মিজানুর রহমান। তার পাশাপাশি স্ত্রীও এই পানি ফল চাষে আগ্রহ নিয়ে কাজ করছেন। তবে মিজানুর রহমান জানান, জমিগুলো পানির তলে পরে থাকে, প্রথমবারের এই আবাদ করে ভালো টাকা পেয়েছেন। এছাড়াও জমি থেকে আরও ফল পাবে তিনি । ২ হাজার টাকা দরে মন বিক্রি করে আসছে। এই আবাদের খরচ একটাইমাত্র কীটনাশক স্প্রে করতে হয় সার লাগে না।
পানেয়া গ্রামের তারা মিয়া বলেন, শুধু মাত্র এ অঞ্চলে বিল বেশি আর বিলের পানিতে সিংঙ্গর আবাদ করা হয়। আমাদের এলাকার লোকজন এই আবাদ সম্পর্কে কিছু ধারনা ছিল না।পানেয়া গ্রামে আমি এই আবাদ নিয়ে এসেছি। এখন এ এলাকায় ২০ থেকে ৩০ জন মানুষ পানি ফল বা (সিংঙ্গরের) চাষ করছে। নিজের জমি ছাড়াও অন্যের জমি লিজ নিয়ে বানিজ্যিক ভাবে লোকজন এই ফলের আবাদ করছে। তবে প্রতি বছর আবাদের পরিমাণ বাড়ছে।
ইউনিয়নটির জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, পাঁচগাছি ইউপিতে অনেক বিল রয়েছে বিশেষ করে এই বিল গুলোতে জলাবদ্ধতার পানি সবসময় থাকে যে কারনে বছরে শুধু একবার ধানের চাষ করা হয়। এইরকম জলাবদ্ধতার জমি গলোতে পানি ফল আবাদ করা হচ্ছে। একবার যে ব্যক্তি চাষ করেছে সে আর এই আবাদ ছাড়ছে না। চাষিদের সংখ্যা বছরে বছরে বেড়ে যাচ্ছে। বানিজ্যিক ভাবে এ অঞ্চলে পানি ফলের চাষ করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, অনাবাদি জমিতে পানি ফলের চাষ করা যায়। এই আবাদে খরচ কম সময়মত ফলের গাছে বালাইনাশক বা কীটনাশক প্রয়োগ করলেই ফলন ভালো পাওয়া যায়। পানি ফল চাষাবাদের জন্য অই এলাকার জমিগুলো ভালো। এখানে চাষিদের মধ্যে পানি ফল চাষের আগ্রহ বাড়ছে।