পুলিশের টহলদলের সামনে রাতে লালমিনরহাট তিস্তা সড়ক সেতুর টোলপ্লাজায় সশস্ত্র হামলা, ভাঙচুর-৮ লাখ টাকা লুট: তিন কর্মচারী গুরুতর আহত

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বুধবার রাতে লালমনিরহাট তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় পুলিশের টহল দলের সামনে একদল হেলমেটধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে লুটপাট চালিয়েছে। সশস্ত্র হামলাকারীরা ১৫টি মোটরসাইকেল যোগে এসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে ৮লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় খুব কাছাকাছি পুলিশের টহল দল দাঁড়িয়ে থাকলেও তারা কোন প্রতিরোধ করেনি এমন অভিযোগ করেছেন টোলপ্লাজার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
হামলাকারীরা এ সময় টোলপ্লাজা ভাঙচুর চালানোর সময় বাঁধা দিতে গেলে ৫জন কর্মচারী আহত হন। এদের মধ্যে ৩জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন, সুরুজ্জামান সরুজ মিয়া(৪০), মুসলিম মিয়া(৩৭) ও জুয়েল ইসলাম(২৮)। এদের রাতেই কাউনিয়া উপজেলা স্বস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে সুরুজ্জামান সরুজ মিয়ার অবস্থার অবনতি হলে রাত ১টায় তাকে কাউনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
টোলপ্লাজার ঠিকাদার রানা কনাষ্ট্রাকশনের ব্যবসায়ীক পার্টনার রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমূল আলম নাজু জানিয়েছেন, ঘটনার সময় কোন কিছু বোঝার আগেই অতর্কিত সশস্ত্র হামলায় কর্মচারীরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে তাদের তা সম্ভব হয়নি। বরং সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কর্মচারীরা গুরুতর আহত হন। তিনি গুরুতর অভিযোগ করে বলেছেন বেশ কিছু সময় ধরে হামলাকারীরা ক্যাশবাস্ক ভেঙ্গে ৮ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়, এ সময় একজন পুলিশের এসআই পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা টহল দল নিয়ে ঘটনাস্থলের প্রায় ২৫ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। অথচ তিনি সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার কোন উদ্যোগ নেননি। হামলায় আক্রান্ত কর্মচারীরা এ সময় পুলিশের সাহায্য চাইলেও কোন সাড়া পায়নি। ঘটনার সময় যারা ছিলেন তাদের ভাষ্যমতে ডাকাতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে ডাকাতদের পরিচায় পাওয়া গেছে বলে তিনি জানা গেছে। নাম প্রকাশে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, স্থানীয় এক যুবদল নেতার নেতৃত্বে ওই সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। যাদের নামে থানায় মামলা করা হয়েছে এদের মধ্যে অনেকেই বিএনপি,যুবদল ও ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। নাজমূল আলম নাজু বাদি হয়ে ঘটনার রাতেই লালমনিরহট সদর থানায় ১৫জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২৫জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন, মামলায় আসামি করা হয়েছে যাদের তারা হলেন,। মাহফুজার রহমান রাজু(৪০), আবুব্বকর সিদ্দিক(৪৮), ফজলুর রহমান(৩৫), মিঠু ভেকু(৩৮), মাফু(৪০), রহিম(৪২), লাইজু(৪০), মজিদ(৩৫), এনামূল (৪০), মোমিনুল গাছকাটা(৪০), কামাল(২৮), খোরশেদ(৩৮), রেজাউল (৩৫), বাবু (৪৩) ও সাদেক(২৩)।
টোলপ্লাজার ম্যানেজার দাউদ আলী সরদার অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার সময় পুলিশের নীরব ভূমিকার কারনে সন্ত্রাসীরা নির্বিগ্নে ভাঙ্গচুর কওে ৮ লাখ টাকা লুট করে চলে যেতে পেরেছে। টোলপ্লাজার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী নারায়নগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিবউর রহমান। তাকে মোবাইলে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি তাই তার বক্তব্য জানা যায়নি।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মোঃ নুরুন্নবী জানিয়েছেন এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা কি তা অনুসন্ধান না করে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মামলায় অভিযুক্তদেও গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। কেউ যদি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত থাকেন সেটি পুলিশের বিবেচ্য বিষয় নয়। পুলিশের দৃষ্টিতে অপরাধির কোন পরিচয় নেই।