কুড়িগ্রামে বাড়ছে নদী ভাঙ্গন,নি:স্ব হচ্ছে হাজারো পরিবার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
নদী ভাঙ্গন কুড়িগ্রামবাসীর বিষফোঁড়া হিসেবে দাড়িয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে ও বন্যা সব সময়ে ভাঙ্গছে নদী। নদীর পানি কমলেও ভাঙ্গে বাড়লেও ভাঙ্গে। নদী ভাঙ্গন বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় নদী পারের মানুষ। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ৫ কি: মি: এলাকা জুড়ে নদী ভাঙ্গছে। জরুরী ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবী ভাঙ্গন রোধে প্রকল্প অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করবেন।
শুষ্ক মৌসুমে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাস ইউনিয়নের মাঝি পাড়া ও ইসলামপুর গ্রামে এভাবেই ভাঙ্গছে গঙ্গাধর নদী। নদী ভাঙ্গনের স্বীকার হয়ে ইতোমধ্যে শত-শত মানুষ হারিয়েছে তাদের ভিটে মাটি। সাধারণত বর্ষায় নদীর পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের সময় নদী ভাঙ্গলেও। জেলার ব্রহ্মপুত্র,ধরলা,দুধকুমার,গঙ্গাধর,তিস্তাসহ প্রধান নদ-নদী এখন সারাবছরই ভাঙ্গছে। ফলে প্রতিনিয়ত দেশের বৃহৎ নদীমাতৃক জেলার মানুষ কৃষি জমি,বসত ভিটেসহ সম্পদ হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়ছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বাড়ছে নদীর পানি সেই সাথে ভাঙ্গছে নদী।
মাঝিপাড়া এলাকার গাজিউর রহমান ও আব্দুর রশিদ জানান,
নদীতে পানি কমা-বাড়ার সাথে নদনদীর ভাঙ্গন তীব্ররূপ ধারণে করে। ভাঙনের মুখে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,মসজিদ, হাট-বাজারসহ বিস্তৃর্ণ জনপদ বিলিন হয়েছে। নদীপারের বাসিন্দারা ভাঙ্গন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। গত তিনদিনে এ এলাকার ১০ জন মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।
হরিপদো, সুবাষ চন্দ্র বলেন, বছরের পর বছর নদী ভাঙ্গনের স্বীকার হয়ে নি:স্ব হওয়া দারিদ্র পরিবারগুলো এখন নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। জন্মস্থান ছেড়ে অনেকেই হয়েছে দেশান্তরি। তাই ভাঙ্গন রোধে সরকারকে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিতে দাবি জানান তারা।
সাবেক সাংসদ এবং জেলা বিএনপি নেতা সাইফুর রহমান রানা বলেন,
নদী বেস্টিত সম্ভাবনাময় কুড়িগ্রাম জেলাকে রক্ষা করতে এবং নদী কেন্দ্রিক অর্থনীতি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব এবং বৈষম্যকে দায়ি করেন তিনি ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, গত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এবং উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট বড় ১৬ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নীচু এলাকা তলিয়ে গছে।
সেই সাথে নদী ভাঙ্গন বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে এই কর্মকর্তা বলেন,রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলায় প্রায় ১৬কিলোমিটার স্থায়ী তীররক্ষা প্রকল্প প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও জেলায় নদনদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙ্গন অব্যাহত আছে। এসব ভাঙ্গন রোধে জরুরি ভিত্তিতে ৩০কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন করা গেলে আগামীতে নদীর ভাঙ্গন থেকে কুড়িগ্রামবাসী রক্ষা পাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।