মিঠাপুকুরে বিএনপি’র ত্যাগী নেতাকর্মীদের কমিটিতে না রাখায় অসন্তোষ! বিতর্কিত কমিটি পূনর্গঠনের দাবী

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় বিএনপির ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়নি ত্যাগী ও দলের দুর্দিনের নেতাকর্মীদের।
গত শনিবার (২৩ মে) উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের কমিটি প্রকাশ করেন মিঠাপুকুর বিএনপি। এতে অযোগ্য, সুবিধাভোগী ও আওয়ামী চেতনাধারীদের জায়গা করে দেয়া হয়েছে বর্তমান কমিটিতে, এমন অভিযোগ এখন উপজেলার সর্বমহলে। পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে কয়েকটি ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। এতে করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হবে বলে মনে করেন দলটির দুর্দিনের কর্মীরা।
সরেজমিনে ইমাদপুর ইউনিয়নে ঘুরে নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে নানা তথ্য উপাত্ত। ইমাদপুর ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি প্রফেসর মাহমুদ আলম বলেন, আমার ইউনিয়নে বিভিন্ন পদে ২৪ জন আওয়ামী সুবাধাভোগী কমিটিতে স্থান পেয়েছে। ইউনিয়ন কমিটিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে হেরে গেছেন তাদের সম্মান জনক পদে রাখা হয়নি। নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির দূর্দিনে অন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশ গ্রহন করেও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ন -আহ্বায়ক আনাউল ইসলাম সিটকে পড়েছে হাইব্রিডদের ভিরে । আওয়ামী সুবিধাভোগীরা গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলেও ৯০ দশক থেকে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত থাকা পরিদর্শক সুলতান খান সাধারন সদস্যপদ পায় নি এই কমিটিতে। ইউনিয়ন কমিটি গঠনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে যারা হেরে গেছেন তাদের অবমূল্যায়ন করায় এমন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে বলে মনে করেন এই সমর্থক। অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে ইমাদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন খন্দকার জুয়েল বলেন, ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করে একটি মানসম্মত কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ১৬ নং মির্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান কমিটিতে দুর্দিনে দলের হাল ধরা অনেক নেতাকর্মীর জায়গা হয়নি। একপেশে ও অযোগ্যদের অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই ইউনিয়নের সাবেক দুইবারের সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিটুল। ক্ষোভ প্রকাশ করে এই নেতা বলেন,
দুর্দিনে দলের পাশে থেকে দলের জন্য যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের অনেককে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,
শুধুমাত্র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে হেরে যাওয়ার কারনে সাধারণ সদস্যপদ দেওয়া হয়নি সাবেক সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক সামাদ সর্দারকে। তিনি বলেন, নিকট ভবিষ্যতে উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত নেতাকে ভোট না দেওয়ার শঙ্কা থেকে দল থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সকল অঙ্গসংগঠনে বিভিন্ন পদে দ্বায়িত্ব পালন করা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ন-আহ্বায়ক হায়ারুল ইসলামকে সকল পদ থেকে বাদ দেওয়ার কারন হিসেবে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন এই নেতা।
এছাড়াও বিএনপির বর্তমান কমিটি আওয়ামী দোসরদের দ্বারা গঠিত। এটি আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী একটি পকেট কমিটি বলে অভিহিত করেছেন উপজেলার সকল ইউনিয়নের পদ বঞ্চিত দলটির দুর্দিনের কর্মীরা।এসব হাইব্রিড নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি পূনর্গঠনের দাবী জানিয়েছেন তারা।
মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাজেদুর রহমান উপজেলা দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের আগেই এই বিতর্কিত কমিটি পূনর্গঠন করার দাবী জানিয়েছন। এতে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট সহ বিএনপির ভোট ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।