হত্যা নাকি আত্নহত্যা বদরগঞ্জে পুকুরে ভাসছিল রেলকর্মচারির মরদেহ
![](https://www.amader-protidin.com/storage/postpic/1705577882.webp)
আঞ্চলিক প্রতিনিধি:
মোকাদ্দেস হোসেন (২৮) নামে এক রেল কর্মচারির মরদেহ রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরশহরের বালুয়াভাটা লিচুবাগান এলাকার একটি পুকুর থেকে পুলিশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার(১৮ জানুয়ারি) সকালের দিকে পুকুরে মৃত্যু দেহটি ভাসতে থাকলে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পুকুর পাড়ের একটি আম গাছের ডালে সাদা রঙের রশি গাছে বাধা অবস্থায় ছিল। গাছের গোড়ায় এক জোড়া স্যাণ্ডেল পাওয়া যায়। এটি হত্যা না আত্নহত্যা তা নিয়ে ধোয়াশায় পড়েছে পুলিশ। এ কারণে মরদেহের ময়না তদন্ত করতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে লাশ পাঠানো হয়। খবর পেয়ে মোকাদ্দেস হোসেন দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার কাজীহাল দাদুল গ্রামের আবদুস সামাদের পুত্র। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘ওয়েম্যান’ পদে নিয়োগ পাওয়ার পর গত ৬ জানুয়ারি মোকাদ্দেস হোসেন বদরগঞ্জে চাকুরি জীবন শুরু করেন। গত তিনদিন আগে বদরগঞ্জ পৌরশহরের লিচুবাগান এলাকার স্বপ্নীল ছাত্রাবাসের একটি কক্ষের সিট ভাড়া নেন তিনি। ঘটনার দিন গত বুধবার রাত এগারোটার দিকে রুম থেকে বের হলে সে আর রাতে ফেরেনি। সকালের দিকে তার রুম থেকে প্রায় দেড়শত গজ দূরে পুকুরে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ ভাসতে দেখে প্রথমে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করলে সেটি মোকাদ্দেস হোসেনের মরদেহ হিসেবে শনাক্ত করা হয়। তার রুমমেট কলেজ শিক্ষার্থী রায়হান আলী বলেন, গত তিনদিন আগে স্বপ্নীল ছাত্রাবাসে আসেন মোকাদ্দেস। আমরা একই কক্ষে ছিলাম। বুধবার রাত ১১টার দিকে দুটি মোবাইল ফোন ঘরে রেখে সে বের হন। রাতে সে আর ঘরে আসেনি। সকালে একজনের মরদেহ পুকুরে ভাসতে থাকলে সঠিকভাবে তাকে চেনা যাচ্ছিল না। পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর তাকে সনাক্ত করা হয়। এদিকে মোকাদ্দেসের ছোট ভাই মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ প্রথমে আমাদের খবর দেয়। বাবার অংশে পাওয়া জমি বিক্রির প্রায় ১৫ লাখ ব্যয় করে আমার বড় ভাই মোকাদ্দেস রেলের কর্মচারি হিসেবে চাকরী নেয়। তবে ইদানিং সে মানষিক হতাশায় ভুগছিল। এখন সে আত্নহত্যা করেছে নাকি তাকে কেউ হত্যা করেছে তা এই মুহুর্তে বলা মুসকিল।’ মোকাদ্দেসের চাচাতো ভাই শাহাদত হোসেন বলেন, ‘অনেক টাকা খরচ করে সে চাকরী নিয়েছে। তার আত্নহত্যা করার কথা নয়। রাত নয়টার দিকেও সে তার মা মনজুয়ারা বেগমের সঙ্গে কথা বলেছে। এক পর্যায়ে সে নাকি জানায় এই চাকরি তার কাছে ভালো লাগছে না। আসলে বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। অকাল মৃত্যুর খবর পেয়ে ফুলবাড়ী থেকে বদরগঞ্জ থানায় আসেন নিহতের মা মনজুয়ারা বেগম। থানা চত্তরে তিনি ছেলের এমন মৃত্যুর ঘটনায় আর্তনাদ করেন। মোকাদ্দেসের সহকর্মী রেল কর্মচারি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মোকাদ্দেস নামে এক নতুন কর্মচারি কিছুদিন আগে বদরগঞ্জে এসে জয়েন্ট করেন। সকালে তার কাজে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে যায়নি। পুকুরে লাশ পাওয়ার খবরে আমরা এসে তাকে সনাক্ত করার চেষ্টা করি। পরে পুলিশ পুকুর থেকে মরদেহ ওপরে ওঠার পর সেটি মোকাদ্দেস বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।’বদরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলেন, ‘মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য মরদেহ পোস্ট মর্টেমের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়া সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ খবর পেয়ে রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যাণ্ড অবস) রাজিয়া সুলতানা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বদরগঞ্জ স্টেশন মাস্টার এএসএম রায়হান হোসেন জানান, নিহত ব্যক্তি ওয়েম্যান পদে চাকুরী করেন। সে আমার অধীনে কাজ করে না। তবে শুনেছি কয়েকদিন আগে সে চাকুরীতে জয়েন্ট করেন।