রৌমারী সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি আহত
![](https://www.amader-protidin.com/storage/postpic/1707662729.webp)
সাখাওয়াত হোসেন সাখা, রৌমারী (কুড়িগ্রাম):
কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ২ বাংলাদেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার (১১ ফেব্রয়ারি) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্তের সীমানা পিলার ১০৫৭ এর কাছে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিন স্থানীয়রা সীমান্তের কাছে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে নবাব মিয়া (২৬)কে আটক করে দাঁতভাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পে সংবাদ দিলে সদস্যরা গিয়ে তাকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যান। নবাব মিয়া ধর্মপুর উত্তপাড়া গ্রামের মৃত জয়নালের ছেলে। দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাজাহান আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতদের মধ্যে একজনের নাম জানাগেছে তিনি ধর্মপুর গ্রামের জব্বার মিয়া (৫২)।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে বাংলাদেশি চোরাকারবারিদের সঙ্গে স্থানীয়দের মারামারি হয়। এতে চোরাকারবারিদের ধারালো কাচির আঘাতে আহত হন সহিদুর রহমান (৩২)। গুলিবিদ্ধ জব্বারসহ সম্পর্কে জামাই শ^শুর। আরেকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে তাঁর নাম জানা যায়নি। তবে আহতরা গোপনে কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছে তা জানা যায়নি।
শাজাহান আলী বলেন, ‘দুপুরের দিকে বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে বসবাসকারী স্থানীয়রা গরু, ছাগল নিয়ে ঘাষ খাওয়ানোর জন্য ভারতের ১০৫৭ নম্বর পিলারের নো—ম্যান্সল্যান্ডের কাছে ফাঁকা পতিত জমিতে যায়। এ সময় একদল গরু চোরাকারবারি তারা সীমান্তের কাছে ভারতের ব্রীজের নিচে দিয়ে গরু পাচার করার জন্য গিলে স্থানীয়রা তাদের গালিগালাজ করে। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে চোরাকারবারিদের মারামারি লেগে যায়।
পরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আসাম রাজ্যের হাটশিঙিমারী জেলার মানকারচর থানার কুহুরমারা ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্যরা তাদের উপর কয়েক রাউন্ড গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ করেন। এসময় জব্বার মিয়ার পিঠে গুলি লাগে। পরে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে আরও একজনকে গুলি লাগার বিষয় শুনেছি কিন্তু নাম জানাযায়নি।’
সীমান্তের বিশ^স্ত সূত্রে জানাগেছে, এ ঘটনায় ভারতীয় বিএসএফের অতিরিক্তি সদস্যরা সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে। এদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নিয়মিত টহলে অতিরিক্ত সদস্য দেখাগেছে বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান মুঠোফোনে বলেন, বিজিবি কতৃর্ক আটক নবাব মিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ অভিযোগে বিজিবি বাদি হয়ে এজাহার দিয়েছেন এবং আটক ব্যক্তিকে থানায় সোপর্দ করেছেন। মামলা রুজুর পর আসামীকে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান।
জামালপুর—৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে, কর্নেল মো. হাসানুর রহমান হাসান বলেন, আন্তর্জাতিক সীমানা পেরিয়ে ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতার কাটার জন্য সীমান্তের নো—ম্যান্সল্যান্ড যাওয়ার চেষ্ঠাকালে স্থানীয়রা নবাব মিয়া নামের একজনকে আটক করে বিজিবিকে সংবাদ দেয়। পরে ঘটনাস্থলে দাঁতভাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা গিয়ে আটক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং রৌমারী থানায় সোপর্দ করেন।
গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের বিষয় জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, সীমান্তে চোরাকারবারি ও স্থানীয়দের মারামারি ভারতীয় শুন্য রেখার কাঁটাতারের কাছে যায়। এসময় বিএসএফ ককটেল বিস্ফোরণ করেন। দিনে দুপুরে কি করে গরু পাচার করতে যায়। এ জন্য চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে আমার বাহিনী শক্তভাবে প্রতিহিত করবে বলে জানান।