১১ শ্রাবণ, ১৪৩১ - ২৭ জুলাই, ২০২৪ - 27 July, 2024
amader protidin

কুড়িগ্রামে আগুন আতংকে গ্রামবাসী

আমাদের প্রতিদিন
5 months ago
138


কুড়িগ্রাম অফিস:

কুড়িগ্রামে একই গ্রামে একাধিক অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আতংকে গ্রামের মানুষ। ভুক্তভোগী পরিবার গুলোর দাবী গভীর রাতে একটি মটর সাইকেলের শব্দ শোনার পরেই ঘটছে আগুন লাগার ঘটনা।

কুড়িগ্রাম নাগেশ্বরী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাঘডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা গহুরন বেগম। তার গো খাদ্য রাখা খড়ের গাদায়  গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টার দিকে আকষ্মিকভাবে আগুন লেগে পুড়ে যায়। তার মতো আব্দুর রহিমের বাড়ির রান্না ঘরে এক সপ্তাহে তিনবার আগুন লাগার ঘটনা ঘঠেছে গভীর রাতে। গত দেড় মাসে শুধু ওই গ্রামে ১০/১২টির অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। গ্রামটিতে গভীর রাতে বাসিন্দাদের গো—খাদ্য রাখা খড়ের গাদা কিংবা রান্না ঘরে হঠাৎ করে আগুন জ্বলে উঠছে। বেশীর ভাগ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা খড়ের গাদায়। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই প্রতিবেশী এবং ফায়ার সার্ভিস কমীর্রা আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও আগুন লাগার উৎস থেকে যাচ্ছে অন্তরালে। রহস্য ঘেরা এসব আগুনের ঘটনা ঠেকাতে রাত জেগে গ্রামের মানুষ পাহাড়া দিলেও প্রতিকার মিলছে না। ফলে আগুন আতংকে দিন কাটছে  গ্রামের মানুষের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ প্রতিটি আগুন লাগার ঘটনার আগে একটি মটর সাইকেলের শব্দ পাওয়া যায়। এই মটরসাইকেল চলে যাওয়ার পর পরই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ ১২ ফেব্রুয়ারী ভোর রাতে আব্দুর রহিম মিয়ার রান্না ঘরের চালে। ১০ ফেব্রুয়ারী আব্দুল খালেকের খড়ের গাদায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া একই গ্রামের ইউসুফ আলী,ফজলুল হক,নজরুল ইসলাম,সৈয়দ আলী,মজিদ মিয়াসহ দেড় মাসে প্রায় ১০/১২টি খড়ের গাদায় আগুন লাগে। ফলে আগুন আতংকে রাত—দিন পাড় করতে হচ্ছে গ্রামের প্রতিটি বাড়ির মানুষকে। কে বা কারা আগুন দিচ্ছে রাত জেগে পাহাড়া দিয়েও তাদের ধরতে পারছেন গ্রামবাসী। রহস্য উৎঘাটন হচ্ছে না মটরসাইকেল যাওয়া শব্দের। গ্রামবাসীর অনেকে ধরেই নিয়েছে এগুলো জ্বীন—ভুতের কাজ। গ্রামের সচেতন মানুষের দাবী গ্রামের শান্তি ও সৌহাদ্যর্ সম্পর্ক নষ্ট করতে এমন আতংক ছড়ানো হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে এদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।

আব্দুর রহিম বলেন,প্রায় দেড় মাসে আমাদের এখানে ১০/১২টি বাড়ি আঙ্গিনায় খড়ের গাদায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলেও কোন লাভ হয়নি। আমরা এখন গ্রামের প্রতিটি বাড়ির লোকজন রাত জেগে পাহাড়া দিয়েও কাউকে ধরতে পারছি না।এক সপ্তাহে তিনবার আমাদের বাড়ির রান্না ঘরে রাত ২/৩টার দিকে কেবা কারা আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের সাথে কারও কোন বিবাদ নেই। আগুন লাগিয়ে দেবার কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।

গহুরন বেগম বলেন,বাড়ির আঙ্গিনাতে গরুর খাবার রাখা খড়ের গাদায় ৩/৪টার দিকে কে যে এসে আগুন দিলেও কিছু বুঝতে পারছি না। হঠাৎ আগুনে পোড়ার শব্দে বাড়ির লোকজন,গ্রামবাসী এবং ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিভেয়েছে। এখন আমরা পরিবার নিয়ে প্রতি রাত দুশ্চিন্তা আর ভয়ে কাটাচ্ছি।

নজরুল ইসলাম বলেন,গ্রামের কোন পরিবারের সাথে কারও কোন বিবাদ নেই। গভীর রাতে একটি মোটর সাইকেলের শব্দ পাওয়া যায়। এরপর কিছুক্ষণ পরেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটতেছে। গ্রামের প্রতিটি মানুষ এখন আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।

মজিদ মিয়া বলেন,গ্রামের শান্তি ও সৌহার্দ্য সম্পর্ক নষ্ট করতে কেবা কারা আতংক ছড়ানো উদ্দে্যশ্যে এমন ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবী সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধিকে ধরে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।

নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিলি ডিফেন্স স্টেশনের অফিসার ইমন মিয়া বলেন, বেশীরভাগ আগুন লাগার ঘটনায় আগুনের উৎস পাওয়া গেলেও গভীর রাতে খড়ের গাদায় আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। জানুয়ারি হতে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত উপজেলায় ৩৫টি অগ্নিসংযোগের ঘটনার মধ্যে ২৪টি বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা খড়ের গাদায় লেগেছে।

 

 

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়