১১ শ্রাবণ, ১৪৩১ - ২৭ জুলাই, ২০২৪ - 27 July, 2024
amader protidin

বন বিভাগের কর্তাদের উপর ক্ষুব্ধ সুবিধাভোগীরা গোপন টেন্ডারে নামমাত্র মূল্যে বনজ গাছ বিক্রি

আমাদের প্রতিদিন
4 months ago
115


গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি:

চুক্তিবদ্ধ সুবিধাভোগীদের অজ্ঞাতে অতি গোপনে টেন্ডারের মাধ্যমে বন বিভাগ কর্তৃক নামমাত্র মূল্যে বনজ গাছ বিক্রি করায় বিপাকে পড়েছে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ক্রয়কৃত গাছ উত্তোলনকালে সুবিধাভোগীরা বিষয়টি জানতে পেয়ে গাছ উত্তোলনে বাঁধা দেন এবং গোপন টেন্ডার ও কার্যাদের বাতিলের দাবী জানান। ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের উত্তর পানাপুকুর গ্রামে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি মৌখিকভাবে গাছ উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেন।

সুবিধাভোগী সদস্য সায়েম, তুহিন, নজরুল মিজান, রতন, ইউনুছ, মইনুলসহ কয়েক জন  জানান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচ ক্যানেলে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় বড়বিল ইউনিয়নের উত্তর পনাপুকুর গ্রামে ১ কি.মি. দৈর্ঘ্য ক্যানেলের দুধারে বনজ বৃক্ষ রোপনের জন্য ২০১০ সালের বন বিভাগের সাথে আমরা ১২ জন সুবিধাভোগী সদস্য চুক্তিবদ্ধ হই। চুক্তি মোতাবেক গাছের চারা লাগিয়ে পরিচর্যা করে আসছি দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে। হঠাৎ করে দেখছি ২ দিন ধরে কারা যেন গাছগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে। পরে জানতে পাই ¥াদের রোপিত গাছগুলো ৩টি লটে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে। এর মধ্যে যে লটটির গাছ কাটছে তার অধিকাংশই শিশু গাছ। এ গাছগুলোর ডাল বাদেও কাঠ পাওয়া যাবে প্রায় ৪০০ ঘন বর্গফুট। যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। অথচ বন বিভাগ আমাদের না জানিয়ে গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে মাত্র ৯৪ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছে।

তারা আরো জানান, আমাদের জানিয়ে টেন্ডার করলে আমরা নিজেরাই টেন্ডারে অংশ নিতে পারতাম। এতে আমাদের রোপিত গাছ আমাদের পুরোপুরি ভোগ করার সুযোগ থাকতো। অথচ তাদের বিক্রিত মূল্যের শতকরা ৫৫ ভাগ পাব আমরা সুবিধাভোগীরা। যার পরিমাণ ৫২ হাজার টাকারও কম। যার জন প্রতি অংশ হবে ৪ হাজার ৩৩১ টাকা মাত্র। ১৪ বছর পরিশ্রম করে আমরা পারিশ্রমিক পাব মাত্র ৪ হাজার করে টাকা। আর ঠিকবাদার ও বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা ১৪ দিনেই পাবে লাখ লাখ টাকা। তাই তিনিসহ সকল সুবিধাভোগীই সম্পাদিত টেন্ডার ও কার্যাদের বাতিলের দাবী জানান।

সুবিধাভোগী গ্রুপের সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, ৫/৬ মাস আগে আমাকে বন বিভাগের রংপুর সদর অফিসে ডেকে একটি কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন গঙ্গাচড়া উপজেলার ফরেষ্টার (এসএফপিসি) আখতার। তার কথায় আমি একটি কাগজে স্বাক্ষর করি। আমি মূর্খ মানুষ, কিছু লিখতে ও পড়তে পারি না। কেবল নিজের নাম লিখতে পারি। এ সময় আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন গাছ বিক্রির জন্য টেন্ডার করা হবে। সময় মত আপনাকে জানানো হবে। এর পর আর আমি কিছু জানি না। এতগুলো গাছ তারা এই সামান্য টাকায় কিভাবে বিক্রি করে আমি বুঝি না।

এ বিষয়ে বড়বিল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদ চৌধুরী জানান, তাদের রেজুলেশনের কপি আমাকে দেওয়ার কথা কিন্থু দেয়নি এবং আমাকে কেউ জানায়ও নি। তদন্ত সাপেক্ষে বন বিভাগের সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বন বিভাগের গঙ্গাচড়া উপজেলা ফরেষ্টার (এসএফপিসি) আখতারুল ইসলাম জানান, সব কিছু নিয়ম মাফিক করা হয়েছে। পাইকারী বিক্রির হিসেবে গাছের মূল্য ঠিক আছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, গাছ বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই। গাছ উত্তোলন আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছি। অনিয়ম থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়