১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ - ২৭ জুলাই, ২০২৪ - 27 July, 2024
amader protidin

সুন্দরগঞ্জে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ

আমাদের প্রতিদিন
4 months ago
134


গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাংগা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য দেলোয়ার হোসেন ধলু মেম্বারের বিরুদ্ধে কাগজপত্র ছাড়াই জোরপূর্বক রোপনকৃত সরিষা তুলে নিয়ে জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে ভুক্তভোগী জমির মালিক প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার না পাওয়ায় নতুন ভূমি অপরাধ ও প্রতিকার আইনে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাংগা ইউনিয়নের নগর কাঠগড়া মৌজাস্থ ভুক্তভোগী জমির মালিক আবু হোসেন ও হামিদুল ইসলাম প্রায় ৩৫/৩৬ বছর পূর্বে কবলা দলিল মূলে তসলিম উদ্দিনের নিকট হইতে ১ একর জমি ক্রয় করে অদ্যবধি ভোগদখল করে আসছেন। বিআরএস রের্কডেও তাদের নামে জমি নথি ভূক্ত হয়। তফশীলি জমি মালিকের বসতবাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় বর্গা দেয়ার মাধ্যমে চাষাবাদ করে আসছেন। গত প্রায় ৭/৮ মাস পূর্ব হতে বামনডাংগা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য দেলোয়ার হোসেন ধলু মেম্বার ও তার লোকজন তফশিলী জমি তাদের বলে দাবি করে জোরপূর্বক দখল, মারপিট ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছেন।

এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সালিশী বৈঠক ডাকা হলেও উক্ত বৈঠকে কাগজপত্র না দেখিয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের হুমকি দেন ওই ইউপি সদস্য। বিষয়টি বেগতিক দেখে জমির মালিক হামিদুল ইসলাম গত বছরের ৫ আগস্ট সুন্দরগঞ্জ থানায় ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন ধলুর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী (জিডি নং—২৫৪) করেন। এরপরও বামনডাংগা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য দেলোয়ার হোসেন ধলু মেম্বার  ও তার লোকজন জোরপূর্বক জমিতে হালচাষ করলে জমির মালিক গত বছর ১৫ নভেম্বর গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবর ও ২৩ নভেম্বর জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে অভিযোগ (অভিযোগ নং—৫৩৩/২৩) করেন। এছাড়াও গত ১১ ডিসেম্বর গাইবান্ধা বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় মামলা (মামলা নং—৭২৭/২৩) দায়ের করেন।

জেলা লিগ্যাল এইডের শুনানীতে উপস্থিত না হয়ে এর আদেশ উপেক্ষা করে ও বিজ্ঞ ম্যাজিস্টেট আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন ধলু ও তার লোকজনসহ প্রায় ২০—৩০জন পূরুষ—মহিলা তফশীলি জমিতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে রোপনকৃত সরিষা তুলতে থাকেন। এতে জমির মালিক ও তার লোকজন বাঁধা দিলে মারপিট ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। উপায়ন্তর না দেখে জমির মালিক হামিদুল ইসলাম পুলিশী সহায়তার জন্য ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করলে পুলিশ এসে এতে বাঁধা দেয়।

পরবর্তীতে পুলিশ প্রশাসন চলে গেলে ধলু মেম্বার ও তার লোকজন পুনরায় সরিষা তুলে বাড়িতে নিয়ে যায়। ইউপি সদস্যের এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক হয়ে যান এলাকাবাসী। পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী জমির মালিক হামিদুল ইসলাম ইউপি সদস্য ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী হামিদুল ইসলাম বলেন, একজন ইউপি সদস্য কিভাবে কাগজপত্র ছাড়াই অন্যের জমি দখল করে, আমার বোধগম্য নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ ইউপি চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে অবগত করেছি। এখনো কারো কাছ থেকে কোনো সমাধান পাইনি। আমি মনে করি ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজন জনপ্রতিনিধি এভাবে আমাকে হয়রানি করতে পারেন না। জমি দখল করার পাশাপাশি এখন সে আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি চরম নিরাপত্ত্বাহীনতায় ভুগছি।  

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বামনডাংগা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য দেলোয়ার হোসেন ধলু বলেন, জমির মালিক তো আমি নই, এই জমি আমার মায়ের নামে রয়েছে। অভিযোগকারী যেসব অভিযোগ এনেছে তার কোনো ভিত্তি নেই। অহেতুক আমাকেসহ আমাদের তিনভাইকে আসামি করে মামলা করেছে। এখন যেহেতু মামলা চলমান তাই এসব অভিযোগের ফয়সালা আদালতেই হবে।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়