৭ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২০ এপ্রিল, ২০২৪ - 20 April, 2024
amader protidin

এবার কুড়িগ্রামে স্কুল শিক্ষককে পেটালেন বিএনপির নেতা: ৪ জনের নামে থানায় মামলা

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
130


ভর্তি বাতিল শিক্ষার্থীদের ভর্তি না করায় ঘটনার সূত্রপাত

আহসান হাবীব নীলু, কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানার নেতৃত্বে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হাই সিদ্দিকীকে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। রৌমারীতে প্রধান শিক্ষককে আওয়ামীলীগ নেতার মারপিটের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে রোববার কুড়িগ্রামে আবারো শিক্ষক পিটানোর ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে জীবনের নিরাপত্তা এবং বিচার চেয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় ৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত অরো কয়েকজনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন আহত শিক্ষকআব্দুল হাই সিদ্দিকী।মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন জেলা বিএনপির সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা এবং তার সঙ্গী রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান ও বিদ্যুৎ।

অনুসন্ধানে জানাযায়,ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত নিতে এসে এক পর্যায়ে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকীর উপর চড়াও হয়ে তাকে মারপিট করেন কুড়িগ্রাম বিএনপির সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবংজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা। তিনি ভর্তি বাতিল এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক হিসাবে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হকর কক্ষে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটান। এ সময় তার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিলেন। সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা এ দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলা জুড়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এ ঘটনায় নির্যাতিত শিক্ষক বাদি হয়ে ৪জনের নাম উল্লেখ করে এবং কিছু অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

আহত শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, পিয়নের মুখে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে হট্টগোলের খবর পেয়ে সেখানে যাই। কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানের ভর্তি বাতিল বিষয়ে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হয়। আমি তাদের সাথে কথা বলতে গেলে ১নং আসামী কুড়িগ্রাম মোল্লাপাড়ার ব্যাসায়ী আব্দুল আজিজর পূত্র বিএনপি নেতা মো. মাসুদ রানা প্রথমে আমার উপর চড়াও হয়। এরপর ধাক্কাতে ধাক্কাতে এক কোনায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সবাঈ মিলে কিলঘুষি মেরে মরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিলাফুলা জখম করে। বর্তমানে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছি। একই সাথে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

অভিযুক্ত মাসুদ রানা জানান, আমার সন্তানকে ১৮ ডিসেম্বর স্কুলে ভর্তি করাই। ২৮ ডিসেম্বর স্কুলের নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে জানতে পারি আমার সন্তানসহ ৪২জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। সে ব্যাপারে কয়েকজন অভিভাবকসহ প্রধান শিক্ষককে দরখাস্ত দিয়ে কপি গ্রহন করি। এসময় কথা বলার এক পর্যায়ে একজন শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে পরলে তার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। আমি তাকে লাঞ্ছিত করি নাই।

কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক জানান, স্কুলে ভর্তির বিষয়ে অভিভাবকগণ শিক্ষার্থীদের নামে একাধিক আবেদন করায় ঢাকায় মন্ত্রণালয় থেকে ৪২জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে দেয়া হয়। এনিয়ে কিছু অভিভাবক কথা বলতে গিয়ে আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এরই প্রতিবাদ করায় সিনিয়র সহকারি শিক্ষক আব্দুল হাই সিদ্দিকীর উপর চড়াও হন অভিভাবক মাসুদ রানা। তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলতে বলতে তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে এক কোনায় নিয়ে যান এবং কিলঘুষি মেরে আহত করেন। এ ব্যাপারে মাসুদ রানাসহ, মো. রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান ও মো. বিদ্যুৎর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনের নামে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। 

কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ শাহরিয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

 

 

 

 

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়