১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ - ২৭ জুলাই, ২০২৪ - 27 July, 2024
amader protidin

মিঠাপুকুরে ৭ ইউনিয়নের ২৫ পয়েন্টে চোলাই মদের জমজমাট কারবার!

আমাদের প্রতিদিন
10 months ago
523


মধ্যপানে ৩ বছরে ৫ জনের মৃত্যু

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:

রংপুরের মিঠাপুকুরে ৭ ইউনিয়নের প্রায় ২৫ পয়েন্টে বেড়েছে চোলাই মদের কারবার। হঠাৎ করে চোলাই মদ ব্যবসায়ীদের তৎপরতা আশঙ্কাজনক হাড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। মদ্যপায়ীরা দেশীয় মদ, চোয়ানি ও হাড়িয়া নির্ভর হওয়ায় বেড়ে গেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। চোলাইমদ পান করে ৩ বছরে ইমাদপুর ও মির্জাপুর ইউনিয়নের ৫ জন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছে বলে স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিঠাপুকুরের ১৭ ইউনিয়নের মধ্যে ৭ ইউনিয়নের চোলাই মদের কারবার আশঙ্কাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরমধ্যে মির্জাপুর, ইমাদপুর,  রাণীপুকুর, বড় হযরতপুর, দূর্গাপুর, গোপালপুর, পায়রাবন্দ ও ময়েনপুর ইউনিয়নের চোলাই মদ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে বেশি। এই ইউনিয়গুলোর প্রায় ২৫টি পয়েন্টে প্রতিদিন শত শত লিটার চোলাইমদ উৎপাদন ও ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে।

সরেজমিনে মির্জাপুর ও ইমাদপুর ইউনিয়নে গিয়ে জানা গেছে, এই ইউনিয়ন দু’টোতে প্রায় ১০ জন ব্যবসায়ী প্রতিদিন গড়ে ২শ লিটার চোলাইমদ উৎপাদন ও বিক্রয় করছে। এরমধ্যে বৈরাতীহাটে মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের দেয়ালঘেষে বতিস চন্দ্র, জেমস ও তার মা মিলে প্রতিদিন ৪০ লিটার চোলাই মদ বিক্রি করছে। আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মদ্যপায়ীরা সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত চোলাইমদ সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।

বৈরাতীহাট সিনেমা হলের পাশে নিতাই চন্দ্র নামে একজন মাদক ব্যবসায়ি প্রতিদিন চোলাই মদ বিক্রি করছে। অন্যদিকে বৈরাতীহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র হতে দেড়শ মিটার দূরে নুরপুর এলাকার বিশ্বা চন্দ্র ও সুধীর চন্দ্র বাড়িতে বসে চোলাই মদ বিক্রয় করছে। এছাড়াও মির্জাপুর ইউনিয়নের আরিপপুর রাঙ্গামাটি এলাকায় ৫ জন চোলাইমদের ব্যবসায় করছে। তারা স্থানীয় ব্যবসায়ি স্বপন চন্দ্রের কাছ থেকে পাইকারী ক্রয় করে মাদকসেবীদের কাছে খুচরা বিক্রয় করে। পুটিমারি এলাকায় কিনু চন্দ্র ও তিনু চন্দ্র নামের দুইজন ব্যবসায়ী প্রতিদিন গড়ে ৩০ লিটার মদ বিক্রি করছে। ভগবতিপুর এলাকার মুদি দোকানের আড়ালে আব্দুল লতিব চোলাইমদ বিক্রয় করছে। ইমাদপুর ইউনিয়নের তেতুলিয়া নলেয়া পাড়ায় অনিমুল চন্দ্র ও মোটা চন্দ্র নামে দুইজন ব্যবসায়ি চোলাই মদ বিক্রি করছে দির্ঘদিন ধরে। চোলাইমদ পান করে গত ৩ বছরে মির্জাপুর ও ইমাদপুর ইউনিয়নের আব্দুর রউফ, হোসেন মিয়া ,মিজানুর শাহ্, চান্দু মিয়া, জাকির হোসেন মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, দির্ঘদিন ধরে এলাকায় চোলাইমদের কারবার হলেও পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। এরফলে অনেকটা প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা হচ্ছে। দ্রæত মাদক ব্যবসায়িদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরী। একই কথা বলেন বৈরাতিহাট এলাকার রুবেল সাদী ও নয়ন মিয়া। তারা আরও বলেন, দির্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে চোলাইমদের ব্যবসা করলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর খুব একটা তৎপরতা দেখা যায় না।

দুই ইউনিয়নের দ্বায়িত্বে থাকা বৈরাতীহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রফিকুজ্জামান বলেন, অধিকাংশ ব্যবসায়ী সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর হওয়ায় কিছু বাধ্যবাদকতা রয়েছে। তারপরও আমার নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। কয়েকদিন আগেও চোলাই মদসহ একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মিঠাপুকুর থানা ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, চোলাইমদ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাঝে মাঝে কিছু ব্যবসায়িকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হচ্ছে।  

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়