রংপুরের নাট্য শিল্পী রোমান সরকার হত্যা মামলা দীর্ঘ ১৪ বছর পর ৮ আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের নাট্য শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী রোমান সরকার হত্যা মামলায় দীর্ঘ ১৪ বছর পর ৮ আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে রংপুরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক হায়দার আলী এ র্য়া প্রদান করেছেন। রায় ঘোষনার সময় ৭ আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলো। পরে তাদের পুলিশী পাহারায় আদালতের হাজত খানায় নেয়া হয়। যে ৮ জন আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন, আনিস,আশরাফুল,আখতারুল, আমিনুল, আল আমিন, খোকন ওরফে পাকনা খোকন , মোজাম্মেল হক ও নুরন্নবী। এদের সকলের বাড়ি রংপুর নগরীর নিউ জুম্মাপাড়া মারুয়াটারী মহল্লায়।
আদালত ও মামলার বিবরণে জানাগেছে,রংপুরের বিশিষ্ট নাট্য শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী রোমান সরকার পিতা রোস্তম সরকার বাসা রংপুর নগরীর নিউ জুম্মাপাড়া মহল্লায়। তিনি একজন একজন জনপ্রিয় নাট্য শিল্পী ছিলেন। আসামীরা মাদক ব্যবসায়ী হওয়ায় কয়েক দফা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। এ সব ঘটনায় নাট্য শিল্পী রোমানকে সন্দেহ করতো আসামীরা। এরই জের ধরে ২০০৫ সালে তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে স্¦জনদের মারধর করে আহত করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় নিহত রোমানের বাবা রোস্তম সরকারের দায়ের করা মামলায় আসামীদের আদালত কর্তৃক সাজা হয়। আসামীরা আপীল দায়ের করে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো তাদের প্রান নাশের হুমকি দিতে থাকে। এ ব্যাপারে নিহত রোমানের পরিবার থানায় নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করে এবং আদালতে ১০৭ ধারার মামলা দায়ের করে।
এরই জের ধরে ২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৯ টায় আসামী আনিস মোবাইল ফোনে রোমানকে ডেকে আনে। এ সময় ওত পেতে থাকা আসামীরা রোমানকে উপযূপরি কুপিয়ে গুরতর আহত করে। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ভোরে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সাংস্কৃতিক কর্মী রোস্তম সরকার বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত শেষে ৮ আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসীট দাখিল করে। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে বিচার চলা কালিন ১২ সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে ৮ আসামীকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং প্রত্যেক আসামীকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।
সরকার পক্ষের আইনজিবী পিপি আব্দুল মালেক এ্যাডভোকেট জানান আসামীরা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বার বার সময় নিয়ে বিচার বিলম্বিত করার চেষ্টা করে। দীর্ঘদিন পরে হলেও আসামীদের সাজা হওয়ায় ন্যায় বিচার পাওয়া গেছে। এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। রায় ঘোষনার সময় আসামী পক্ষের কোন আইনজিবী উপস্থিত না থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।