গঙ্গাচড়ায় সরকারি কৃষি প্রণোদনার বীজ নিয়ে লোকসানে পড়েছেন পেঁয়াজ চাষিরা
নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সরকারি কৃষি প্রণোদনার পেঁয়াজের বীজ রোপণ করে লোকসানে পড়েছেন পেঁয়াজ চাষিরা।
আবাদের পর পেঁয়াজের গুটির বদলে মিলছে শুধুই শেকড়। ফলন না পাওয়ায় কপাল পুড়েছে উপজেলার ২০০ জন কৃষকের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে , ২০২৩-২৪ অর্থবছরে (২য় ধাপে) উপজেলার ২০০ জন কৃষককে সরকারি প্রণোদনার আওতায় পেঁয়াজ বীজ ও সার সহায়তা দেয় কৃষি অফিস।
সরকারি এ বীজে ভরসা করেই জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছিলেন চাষীরা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী পেঁয়াজের জমিতে পরিচর্যাও করেছেন কৃষকরা।
কিন্তু রোপণের ৩-৪ মাসের মধ্যে পেঁয়াজ পরিপক্ক হওয়ার কথা থাকলেও এখন মিলছে শুধুই শেকড়। অগ্রহায়ণ মাসে ক্ষেতে পেঁয়াজ চারা রোপণ করলেও এখন পর্যন্ত মিলছে না পেঁয়াজের গুটি। ক্ষেতগুলোতে পেঁয়াজ গাছ থাকলেও তার গোড়ায় কোনো পেঁয়াজ পাচ্ছেন না চাষীরা। গুটি বাঁধবে এ আশায় চাষিরা দিনের পর দিন অপেক্ষা করে প্রয়োজনীয় সার কীটনাশক ব্যয় করে যাচ্ছেন। কিন্তু গাছ তুললে গোড়াতে শুধু শেকড় ছাড়া কোনো গুটির দেখা মিলছে না। কৃষি অফিসের কাছ থেকে কোনো সদুত্তোর না পেয়ে পেঁয়াজের আশা ছেড়ে দিয়েছেন অনেক কৃষক।
সরেজমিনে উপজেলার গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের বোল্লার পাড় গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামটিতে প্রায় ৩০ জন কৃষক উপজেলা কৃষি অফিস থেকে অগ্রহায়ণ মাসে নিয়েছিলেন সরকারি প্রণোদনার পেঁয়াজের বীজ।
পেঁয়াজ উত্তোলনের সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও হয়নি পেঁয়াজের গুটি। এ বিষয়ে কৃষক জয়নাল (৫৮) জানান, সরকারি বীজ নিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করে বিপদে পড়েছি। অন্য সকল জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে কিন্তু যারা সরকারি এই বীজ নিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন শুধু তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কৃষক রুহুল আমীন (৩৭) জানান, সরকারি বীজ নিয়ে পেঁয়াজের আবাদ করেছিলেন তিনি। ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ করেছেন এ আবাদের পেছনে। কিন্তু জমিতে পেঁয়াজের বদলে পাওয়া যাচ্ছে শুধুই পেঁয়াজ গাছের শিকড়। পরবর্তী আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
মোরশেদুল (৩৫) নামে আরেক কৃষক জানান শুধু বোল্লারপাড় গ্রাম নয় পুরো উপজেলার কৃষকের একই অবস্থা। সরকারি বীজ নিয়ে ভাল ফলনের আশায় পেঁয়াজ আবাদ করেছিলেন তারা। কিন্তু তাদের জানা ছিল না
সরকারী ভাবে পাওয়া এ পেঁয়াজের বীজে গুটি হবে না। ফলে লোকসানে পড়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন এসব পেঁয়াজ চাষি।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম বলেন, বীজ গুলো বিএডিসি থেকে দিয়েছে। আর আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি, বিষয়টি আমার জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, বীজ গুলো পরিক্ষা করে দেয়া উচিত ছিলো, পরবর্তীতে যাতে ভালো বীজ দেয় বিষয়টি কতৃপক্ষকে অবহিত করবো।