গঙ্গাচড়ায় কমিউনিটি ক্লিনিক ভাঙচুরের অভিযোগ
গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে ।
এবিষয়ে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) আব্দুল বাকী সবুজ বাদী হয়ে ছাইয়েদুল ইসলাম ঝন্টু নামে এক যুবককে প্রধান আসামী করে ৭জনের নামে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃস্পতিবার উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের পশ্চিম বড়বিল কমিউনিটি ক্লিনিকে।
তবে অভিযুক্তদের দাবি ওই কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সবুজের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করায় । তাদের ফাসাতে তারা নিজেরাই ক্লিনিক ভাঙচুর করে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশ ডেকে আমাদের নামে এজাহার দায়ের করেছেন।
সরজমিনে গেলে কথা হয় কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিসৎসা নিতে আসা সাজিনা বেগম (৩৫) নামে এক নারীসহ কয়েকজন স্থানীয় রোগীর সাথে তারা জানান,‘ আমরা ক্লিনিকের ভিতরে ঔষুধ নিচ্ছিলাম এসময় কয়েকজন ছেলে এসে ভিতরে ঢুকে চিল্লাচিল্লি করে । এসময় সাংবাদিক পরিচয়ে এক ব্যক্তি এসে আমাদের কে বলতে বলেন যে এখানে ঔষুধপত্র ঠিক মতো পাওয়া যায় না। আমরা এসব কথা বলতে না চাইলে তখন ওই সাংবাদিক আমাদের রাগ দেখায় । সে সময় আমাদের এখানকার একজন ছেলে ওই সাংবাদিককে আটকাতে ধরলে তখন ওই সাংবাদিক মোটর সাইকেলে করে পালিয়ে যায়। পরে জানতে পারি সে না-কি কোনো সাংবাদিক নয়।
এসময় পাশে থাকা মোসলেমা বেগম (৫৫) নামে আর এক নারী জানান,‘যখনেই ওই সাংবাদিককে আটকাতে গেছে তখনেই বাইরে থাকা কয়েকটা ছেলে ক্লিনিকের ভিতরে থাকা ডাক্টার সবুজ স্যারকে মারতে গেলে এসময় ক্লিনিকের জমি দাতা মোর্শেদা চাচি গেটে দাড়ায় তখন সবুজ স্যারকে মারতে না পেরে ক্লিনিকের ভিতরে থাকা শেখ হাসিনার ছবি আর খাতাপত্র ছিড়ে মেঝেতে ফেলে দেয় । পরে এমন দেখে স্যার ৯৯৯ নম্বরে কলদিয়ে পুলিশকে ডাকলে তারা পালিয়ে যায়।
পশ্চিম বড়বিল কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) আব্দুল বাকী সবুজ জানান,‘ ঝন্টু নামে এক ছেলে দুই-তিনদিন পর পর ক্লিনিকে আসে আর আমার কাছে অনেকগুলো করে ঔষুধ চায়, ঔষুধ না দিলে ক্লিনিকের সামনে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করেন। আর বেতগাড়ী বাজারে বাড়ী এক সাংবাদিক প্রায় আসে আর হুমকি দেয় আমাকে বলে আপনি রোগীদের কাছ থেকে চিকিৎসা দেয়ার নামে টাকা নেন । এখানে যারা চিকিৎসা নিতে আসেন তাদের কাছ থেকে ক্লিনিকের উন্নয়ন মুলক কাজের জন্য ৫ টাকা করে নেয়া হয়। যারা দিতে না চায় আমরা নেই না। আর রোগীদের কাছ থেকে যে টাকা নেয়া হয় তার সব কিছুর হিসাব থাকে খাতায়।
এবিষয় অভিযুক্ত ছাইয়েদুল ইসলাম ঝন্টুর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,‘ আমরা কেনো ক্লিনিক ভাঙচুর করবো আর ক্লিনিকে কি আছে যে আমরা তা লুটপাট করতে যাবো । আজকে আমরা সেখানে গেছিলাম তার অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করার জন্য। আমরা মানববন্ধন শেষ করে সেখান থেকে চলে এসেছি।
এবিষয় নিজেকে সাংবাদিক দাবিকরা ইউটিউব চ্যানেল রাজধানী টিভির সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম সাবলু বলেন,‘ আমি আমার মেয়ের বিয়ের কার্ড নিয়ে এক আত্নীয়ের বাসায় দাওয়াত দিতে যাচ্ছিলাম এমন সময় মানববন্ধন দেখে আমি দাড়ায় গিয়ে ভিডিও করতে ধরি এসময় কয়েক জন লোক আমাকে আটকিয়ে আমার ক্যামেরা ছিনিয়ে নিতে ধরে এসময় আমি সেখান থেকে দ্রুত চলে যাই। আমি কারো কাছে কোনো টাকা পায়সা দাবি করি নাই।
এবিষয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আসিফ ফেরদৌস এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,‘ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার আব্দুল বাকী সবুজ সাহেব যদি অপরাধ করে থাকেন আমরা তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। কিন্তু তারা এভাবে তো সরকারি সম্পদের ক্ষতি করতে পারে না।
অভিযোগের বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুমুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,‘ ক্লিনিক ভাঙচুরের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।