সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত :নেয়া হয়েছে কয়েক স্তুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা :থাকছে দুটি স্পেশাল ট্রেন
প্রস্তুত দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ ময়দান
দিনাজপুর প্রতিনিধি:
ঈদের জামাতের জন্য প্রস্তুত আয়তনের দিক থেকে দক্ষিন এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর—এ শহীদ বড় ময়দান। ঈদুল ফিতরের দিন সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত। বৃহৎ এই ঈদের জামাতে ঈমামতি করবেন মাওলানা সামশুল আলম কাশেমী। সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, মুসল্লীদের যাওয়া আসার সুবিধার্থে দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গোড়—এ শহীদ বড় ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকেই এই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে বড় কোন মিম্বর ছিলো না। ২০১৫ সালে স্থানীয় সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি মিনার নির্মানের পরিকল্পনা ও অর্থায়ন করেন। এরপর ২০১৭ সালে সম্পন্ন হয় নির্মাণকাজ। নির্মিত ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গম্বুজগুলোর দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাবের (যেখানে ইমাম দাঁড়াবেন) উচ্চতা ৪৭ ফিট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ। এছাড়া ৫১৬ ফিট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। দক্ষিন এশিয়ায় এত বড় ঈদগাহ মাঠ দ্বিতীয়টি নেই। এর আগে ঈদগাহের মধ্যে দিনাজপুর স্টেশন ক্লাব থাকলেও এবার তা সরানো হয়েছে। ফলে বেড়েছে ঈদগাহ—এর আয়তন।
পুরো মিনার সিরামিক্স দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে ঈদগাহ মিনার আলোকিত হয়ে ওঠে।
২০১৭ সাল থেকেই প্রতিবারে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করছেন দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা—উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। কিন্ত করোনা পরিস্থিতির কারনে দুই বছর ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি ঐতিহাসিক গোর—এ শহীদ ময়দানে। দক্ষিন এশিয়ার এই সর্ববৃহৎ ঈদগাহে গত প্রায় একমাস থেকে চলছে প্রস্তুতির কাজ। ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে প্রস্তুতি।
দিনাজপুর সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কার্যালয় সুত্রে জানাযায়, মুসল্লীদের জন্য ৩’শটি ওজুখানা, ৪০টি টয়লেট ও খাবার পানি সরবরাহের জন্য ৫টি পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে।
রোববার (৭ এপ্রিল) দিনাজপুর গোর—এ শহীদ ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে ঈদের জামাত সম্পন্নে নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঈদগাহ মাঠে স্থাপন করা হয়েছে ৫০টি সিসি ক্যামেরা। এছাড়াও মাঠের মাঝখানে স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। তিনি জানান, এই জামাতে নামাজ আদায়ে মুসল্লীদের সুবিধার্থে দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে একটি এবং ঠাকুরগাঁও থেকে আরেকটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সর্ববৃহৎ এই ঈদগাহ মিনারের উদ্যোক্তা ও পরিকল্পনাকারী এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান উপদেষ্ঠা জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি বলেন, শোলাকিয়া একটি ঐতিহ্যবাহী মাঠ, তবে আয়তনের দিক দিয়ে দিনাজপুর ঈদগাহ মাঠ চারগুণ বড়। গোর—এ শহীদ ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। উপমহাদেশে এত বড় ঈদগাহ আর নেই। এখানে ঈদের নামাজ আদায় করছেন দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা—উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।