নদী ভাঙ্গা মানুষেরা এইবার ঈদে ভালো-মন্দ খাবার পামো
নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):
তিস্তা নদীতে তিন বার ঘর ভেঙ্গেছে বুলবুলি বেগমের (৭২)। স্বামী মারা গেছেন বহু আগে। সন্তানেরাও দেখভাল করেন না। পরের জমিতে ঘরে কোন রকম দিনাতিপাত করছেন। প্রতিবেশীদের দেওয়া খাবার খেয়ে দিন কাটে বুলবুলি’র। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) গঙ্গাচড়া উপজেলার ধামুর পূর্বপাড়া বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে দূর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। এ সহায়তা পেয়ে হাসি ফুটেছে বুলবুলি বেগমের মুখে। তিনি বলেন, মুই বুড়ি মানুষ। কিছু করবার পারো না। মাইনষে যে খাওয়ার দেয়, তাই খ্যায়া দিন কাটে মোর। ঈদের আগোত এক বস্তা খাবার দিল। এই খাবার দিয়াই ঈদ কাটি যাইবে। যায় খাবার দিল, আল্লাহ ওমাক ভাল করুক। নদী ভাঙ্গা মানুষেরা এইবার ঈদে ভাল-মন্দ খাবার পামো।
গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের ভূমিহীন দিনমজুর আজমল হোসেন। রমজানে কাজ কমে যাওয়ায় কষ্টে দিনাতিপাত করতেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া খাদ্য সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে আজমলের মনে। তিনি বলেন, শুকরিয়া করো। নদী ভাঙ্গা মাইনষের ভিতি ওমরা তাকাইছে। ছাওয়াগুলাক নিয়া কয়েকদিন আন্দাবাড়ি করে খাওয়া যাইবে।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এ কর্মসূচীতে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের ২ হাজার অস্বচ্ছল পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেলসহ জনপ্রতি ১৪ কেজি শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এসব ঈদ উপহার
বিতরণ করেন রংপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আসাদুজ্জামান বাবলু।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্নার সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজিবুল করিম, এমপি প্রতিনিধি আব্দুল মতিন অভিসহ অন্যরা।
এসময় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, রমজানে প্রতিটি ঘরে যেন ঈদের আনন্দ থাকে সে লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছেন। আমি দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের কাছ থেকে এ খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ নিয়ে আমার গঙ্গাচড়ার নদী ভাঙ্গন কবলিত চরের মানুষদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। আগামীতে টেকসই তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উন্নত গঙ্গাচড়া গড়ে তোলা হবে।