চিলমারীতে ফের সক্রিয় অবৈধ বালু ব্যাবসায়ীরা
![](https://www.amader-protidin.com/storage/postpic/1717246411.webp)
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কিছুদিন বিরতির পর ফের সক্রিয় চিলমারীর অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা। এবার আটঘাট বেঁধেই চলছে রমরমা বালু ব্যবসা। তবে কিছুটা কৌশলী হয়েছেন তারা। দিনের পরিবর্তে রাতকে বেঁছে নিয়েছেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ট্রাক ও ডাম্পার দিয়ে সারারাত ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রহ্মপুত্র নদের বালু।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ বালু ব্যবসাটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ তেলিপাড়া থেকে রাণিগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরেরহাট পর্যন্ত ছোট-বড় ১২টি অবৈধ বালু পয়েন্ট রয়েছে।ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দর ছত্রছায়ায় বালু উত্তোলন চলে আসছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
একটি সূত্র জানায়, গত পাঁচ বছরে উপজেলার রাণীগঞ্জ, থানাহাট, চিলমারী, নয়ারহাট, রমনা মডেল ও অষ্টমীরচর ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে চার হাজার পরিবারের বসতভিটা নদীতে চলে গেছে।
এ নিয়ে গত ১২ মার্চে ' বালু উত্তোলনে ঝুঁকিতে ডান তীর প্রকল্প' শিরোনামে পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশ হলে তৎপর হয় স্থানীয় প্রশাসন। নামকাওয়াস্তে অভিযান চালালেও দৃ্যমান কিছু ছিল না। এর কয়েকদিন পর ফের আটঘাট বেঁধে বালু উত্তোলন শুরু করে চক্রটি।
ভাঙনরোধে সরকার কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীরে ব্লকপিচিং তৈরি করলেও অবাধে বালুভর্তি ট্রাক যাতায়াতের কারণে সেটিতে ফাটল ধরেছে। এ ছাড়া অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে হুমকিতে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী জোড়গাছ বাজার, চিলমারী নৌ বন্দর, বিভিন্ন স্থাপনা, শিক্ষ-প্রতিষ্ঠানসহ সহস্রাধিক বসত বাড়ি। যেখানে সরকার নৌবন্দরকে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে চাইছেন সেখানে বালু খেকোদের আগ্রাসনে সেটি কতটুকু ফলপ্রসু হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, আগে দিনে রাতে বালু উত্তোলন করা হয়তো। কিন্তু এখন দিনে কম হয়। অবৈধভাবে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বড় বড় ডাম্পার ট্রাক দিয়ে কুড়িগ্রামসহ আশপাশের জেলায় এসব বালু বিক্রি করা হয়।
চিলমারী নৌ বন্দর থানার ওসি মো. নাজমুল হক বলেন বালু উত্তোলন বন্ধ আছে আবারো যদি বালু উত্তোলন করলে তা বন্ধ করা হবে।
চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজ্জামেল হক বালু উত্তোলন ডাম্পার ও ট্রাক দিয়ে বালু নিয়ে যাচ্ছে এ বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানান এই কর্মকর্তা।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, নতুন এসেছি বিষয়টি জানা নেই। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। কিছুদিন বন্ধ ছিল, তবে যেহেতু আবার বালু উত্তোলন শুরু করেছে, সেক্ষেত্রে খুব শ্রীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।