১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ - ২৭ জুলাই, ২০২৪ - 27 July, 2024
amader protidin

বিএসএফ’র গুলির প্রতিবাদ করায় বিজিবি’র মামলায় বাড়িছাড়া গ্রামবাসী

আমাদের প্রতিদিন
1 month ago
30


আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট :

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বিজিবি—র মামলায় গ্রেফতার আতংকে বাড়ি ছাড়া হয়েছে সীমান্তবর্তী শতাধিক পরিবারের পুরুষ। লোকজনের দাবী বিজিবি—র অভিযোগের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যারা ভারতীয় বিএসএফ’র গুলির প্রতিবাদ করেছেন তাদের আসামী করে মামলা করেছে বিজিবি। ওই উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের পকেট নামক এলাকায় গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার বিকালে ওই সীমান্তে ভারতীয় নগর সিঙ্গিমারী ক্যাম্পের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ—র একটি টহল দল বাংলাদেশে অনু—প্রবেশ করে। ৮৯৩ নং সীমান্ত মেইন পিলারের ৮ ও ৯ নং সাব পিলারের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে প্রথমে গুলি চালায় এবং বাংলাদেশী বসত বাড়িতে হামলার চেষ্টা করেন। এতে আলতাব হোসেন (৫৫) নামে এক বাংলাদেশী তাবলীগ জামাতের মুরুব্বী গুরুতর আহত হয়। পরে বাংলাদেশী সীমান্তবর্তী লোকজন জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করলে ভারতীয় বিএসএফ পালিয়ে যায়। শনিবার বিজিবি ও বিএসএফ—র এক পতাকা বৈঠকে ভারতীয় বিএসএফ এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনাও করেন।

কিন্তু এ ঘটনায় ৬১ বডার্র গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি—র সিঙ্গিমারী ক্যাম্পের ইনচার্জ সুবেদার সফিজুল হক বাদী হয়েছে সীমান্তবর্তী ৭ জনকে আসামী করে হাতীবান্ধা থানায় শনিবার একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় দাবী করা হয়, বাংলাদেশী সীমান্তবর্তী লোকজন অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করেন এবং ভারত থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন। সেই মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছে সীমান্তবতীর্ পকেট এলাকার শতাধিক পরিবারের পুরুষরা।

সীমান্তবর্তী লোকজনের দাবী, বিজিবি—র অভিযোগের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। ভারতীয় বিএসএফ অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বাংলাদেশী কৃষককে গুলি করে এবং বসত বাড়িতে হামলার চেষ্টা চালায়। বাংলাদেশীরা জড়ো হয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ করে। যারা প্রতিবাদ করেন তাদের নামে অনু—প্রবেশের মামলা দিয়েছে বিজিবি।

ওই এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি নুরুল হক জানান, বিজিবি—র অভিযোগটি মিথ্যা। বাংলাদেশী কোনো লোক সেই সময় ভারতে অনুপ্রবেশ করে নাই। বরং ভারতীয় বিএসএফ বাংলাদেশী ঢুকে গুলি ও হামলা করেছে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শামসুল হক জানান, ৭ জনের বিরুদ্ধে বিজিবি যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। আমরা আশা করছি বিজিবি এ ঘটনার আরো তদন্ত করে তাদের দায়ের করা মামলা যেন প্রত্যাহার করে নেয়। এ মামলায় গ্রামবাসীকে হয়রানী করা হবে।

এ নিয়ে মামলার বাদী বডার্র গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি—র সিঙ্গিমারী ক্যাম্পের ইনচার্জ সুবেদার সফিজুল হকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।

হাতীবান্ধা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, ভারতে অবৈধ ভাবে অনু প্রবেশের অভিযোগ তুলে বিজিবি একটি মামলা করেছেন। আমরা তদন্ত করে পরবতীর্ আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়