২২ কার্তিক, ১৪৩১ - ০৬ নভেম্বর, ২০২৪ - 06 November, 2024

জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম

আমাদের প্রতিদিন
4 months ago
184


দেড়শ কোটি  টাকার বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা

বিশেষ বাস ও ট্রেন সার্ভিস চায়

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রংপুর অঞ্চলে হাঁড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশি হলেও ফজলি, সাদা ল্যাংড়া, কালা ল্যাংড়া, মিশ্রিভোগ, গোপালভোগ, আম্রপালিসহ আরও নানা প্রজাতির আম উৎপাদন হয়ে আসছে। এসব আমের ভিড়ে এখন সবচেয়ে বেশি চাহিদা হাঁড়িভাঙ্গার। স¤প্রতি হাঁড়িভাঙ্গা আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ব হাঁড়িভাঙ্গা আম। এবার চাষি ও ব্যবসায়ীরা দেড়শো কোটি টাকা বিক্রির আশা করছেন বলে জানাগেছে।

                            সংরক্ষণে গবেষণার দাবি

কৃষি বিভাগ ও আমচাষিরা বলছেন, জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ব হাঁড়িভাঙ্গা আম। এর আগে বাজারে হাঁড়িভাঙ্গা আম পাওয়া গেলেও তা অপরিপক্ব হবে। হাঁড়িভাঙ্গার প্রকৃত স্বাদ পেতে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে বাগানগুলোতে আমের পরিচর্যা চলছে।

এদিকে হাঁড়িভাঙ্গা আম সংরক্ষণে গবেষণা জরুরি বলে দাবি করা চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এই আম পরিবহনের জন্য বিশেষ বাস ও ট্রেন সার্ভিস চালু করা এখন সময়ের দাবিতে পরিনত হয়েছে। একই সঙ্গে ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। হাঁড়িভাঙ্গা আমের রাজধানী খ্যাত পদাগঞ্জ হাটের রাস্তাঘাটের সংস্কার এবং হাটে আম বিক্রির শেড নির্মাণ, ব্যাংকিং সুবিধা বাড়ানো, পাবলিক টয়লেট স্থাপন ও বৃষ্টির সময় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হোক।

জানাগেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জ এলাকাকে বলা হাঁড়িভাঙ্গা আমের রাজধানী। এখন মিঠাপুকুরের রানীপুকুর, আখিরাহাট, রুপসি, সর্দারপাড়া, পাইকারেরহাট, রুকনীগঞ্জ, বড়বালা, বালুয়া মাসিমপুর, লতিবপুর, ময়েনপুরসহ বদরগঞ্জের নাগেরহাট, কুতুবপুর, গোপালপুর, শ্যামপুর ও সদরের পালিচড়া এলাকায় হাঁড়িভাঙ্গা আমের ব্যাপক চাষ হয়েছে। এছাড়াও রংপুরের পীরগঞ্জ, সদর, পীরগাছা, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, কাউনিয়াসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে এই হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষ বিস্তৃত হয়েছে। স্বাদে—গন্ধে অতুলনীয় সুস্বাদু হাঁড়িভাঙ্গা আম ইতিমধ্যেই  জিআই পণ্য স্বীকৃত লাভ করেছেন। এই আম জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ব হাঁড়িভাঙ্গা আম অর্থাৎ আগামী ২০ জুন থেকে গাছ থেকে পাড়া শুরু হবে। এরপরই শুরু হবে হাঁড়িভাঙ্গার আনুষ্ঠানিক বাজারজাত শুরু হবে।

 

                      ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণ

কয়েকজন চাষি বলেন, রংপুর অঞ্চলের মানুষ এখন অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভের আশায় উঁচু—নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে প্রতিবছর হাঁড়িভাঙ্গা আম চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এতে তারা লাভবান হচ্ছেন।

এবিষয়ে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপ—পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন জানিয়েছেন, চলতি বছর রংপুর জেলায় ৩ হাজার ৩৫৯ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গার চাষাবাদ করা হয়েছে ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন। শুরুর দিকে প্রতি কেজি আম ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে আমের আকার ও পরিস্থিতির অনেক সময় দামের কমবেশি হতে পারে। তিনি বলেন, হাঁড়িভাঙ্গা আম সংরক্ষণে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণা করছে। তবে কবে নাগাদ গবেষণার ফলাফল পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত কেও এখনও বলা যাচ্ছে না। বর্তমানে হাঁড়িভাঙ্গা আমের লাইফলাইন নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে গবেষণামূলক কাজ করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth