প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত; ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, আহত ২০ শিক্ষার্থী
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ঘনেশ্যাম স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক ও আওয়ামীলীগ নেতা মনির হোসেনের লোকজনের বিরুদ্ধে। এতে ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরের পর দক্ষিণ ঘনেশ্যাম স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ অবৈধভাবে একাধিক নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি টেন্ডার ছাড়া বিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। পরে দক্ষিণ ঘনেশ্যাম স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মনির হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়।
কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে তিনি ও তার লোকজন লাঠিসোঁটা, লোহার রড, দা, ছোরা হাতে নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামসুল হককে ১ লাখ টাকা দিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু স্বাক্ষর না দিলে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সহকারী শিক্ষক অধর চন্দ্রের শার্টের কলার ধরে ঘুষি মারতে থাকে। পরে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে বিদ্যালয়ের ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়।
আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে শরিয়ত হাসানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় দক্ষিণ যনেশ্যাম স্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. রাসেল ইসলাম নামে এক ছাত্র বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয় কালীগঞ্জ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নূর-ই-সিদ্দিকী বলেন, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় গিয়েছিলেন বলে শুনেছি। তিনি এ বিষয় শোকজ পেয়েছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। এ অবস্থায় কেন বিদ্যালয়ে গেলেন তা তার কাছে জানতে চাওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে অভিযোগ দিলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবেন বলেও তিনি জানান।
জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান মিজান বলেন, থানায় অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। বাইরে থাকায় এখনও খোঁজখবর নিতে পারিনি। অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।