পুলিশকে কামড় দিয়ে হাতকড়াসহ পালিয়েছে আসামি

সাখাওয়াত হোসেন, রৌমারী (কুড়িগ্রাম):
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় আসামি ধরতে গিয়ে রৌমারী থানা পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) ওপর হামলা করে হাতকড়া সহ পালিয়েছে আসামি।
সোমবার রাত ১০ টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ধনারচর চরেরগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত এসআইয়ের নাম আউয়াল হোসেন। তাকে রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
রৌমারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মমিনুল ইসলাম ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হাতকড়া সহ পালানো আসামির নাম শাহনেওয়াজ আবির রাজু (৩০)। সে যাদুরচর ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি গ্রামের আলী আজগরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও মাদক কারবারের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবার সহ স্থানীয়দের দেশিয় অস্ত্র প্রদর্শন করে ভীতি প্রদর্শন করার অভিযোগও রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আসামি শাহনেওয়াজ আবির রাজুর বিরুদ্ধে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় এক প্রতিবন্ধী স্কুলশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর গ্রামবাসীর তোপের মুখে অভিযুক্ত রাজু পরিবার সহ নিজ গ্রাম ছেড়ে ধনারচর চরেরগ্রামে তার খালা ও সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য শিরিনা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষার্থীর পরিবার পুলিশে অভিযোগ দেয়। ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা এবং অস্ত্র প্রদর্শন করে স্থানীয়দের ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে রাজুকে গ্রেপ্তার করতে সোমবার রাতে এসআই আউয়াল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য শিরিনা আক্তারের বাড়িতে অভিযানে যায়।
তল্লাশি চালিয়ে কয়েক পিচ ইয়াবাসহ রাজুকে আটক করে হাতকড়া পড়ায় পুলিশ। এসময় রাজু, তার মা এবং খালাতো বোন ( শিরিনার মেয়ে) পুলিশের ওপর হামলা করে। এসআই আউয়ালে হাতে কামড় দেয় এবং তার অন্ডকোষে আঘাত করে। সুযোগ পেয়ে হাতকড়া সহ পালিয়ে যায় রাজু।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এসআই আউয়ালকে উদ্ধার করে। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে রাজুর মা আবেদা আক্তার রাজিয়া (৪৮) এবং খালাতো বোন রুনা আক্তার (২৩) কে আটক করে থানায় নেয়। এ সময় ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি দেশি রাম দা উদ্ধার করে পুলিশ।
ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন বলেন, ‘ সোমবার রাতে পুলিশের অভিযান হয়েছে। এ সময় পুলিশকে আঘাত করে আসামি রাজু হাতকড়া সহ পালিয়েছে।’
রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. নবিউল ইসলাম মঙ্গলবার সকালে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ একজন পুলিশ সদস্য চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তার অবস্থা গুরুতর নয়।’
এ বিষয়ে জানতে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামি রাজুকে গ্রেপ্তারের লক্ষে এসআই আউলের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্সসহ পুলিশের দুটি টিম পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, এসময় আসামি রাজুসহ আরও দুই একজন মাদককারবারি পালানোর চেষ্টাকালে আসামি রাজুকে মাদকসহ ধরে ফেলে। পরে আসামি রাজুকে হ্যান্ডকাপ লাগানোর চেষ্টাকালে পালিয়ে যায়।
এএসপি মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ আমি স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য কর্মস্থলের বাইরে আছি। বিস্তারিত বলতে পারছি না। তবে জেনেছি যে পুলিশ সদস্যকে কামড় দিয়ে আহত করেছে। সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।