দক্ষিন এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত সম্পন্ন

লাখো মুসল্লীর একসাথে নামাজ আদায়
দিনাজপুর প্রতিনিধি :
দক্ষিন এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদুল ফিতরের জামাত। বৃহৎ এই ঈদগাহে এবারও বিপুল সংখ্যক মুসল্লীর সমাগম ঘটেছে। আয়োজকরা এবার মুসল্লীর সংখ্যা উল্লেখ না করলেও বিশাল এই জামাতে একসাথে লাখো মুসল্লী নামাজ আদায় করেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ঠরা। সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে নামাজ সম্পন্ন হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আয়োজকরা। নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে বৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশী দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসল্লীরা।
দক্ষিন এশিয়ার বৃহত্তম ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দান। ২২ একর আয়তন বিশিষ্ট এই ঈদগাহে ১৯৪৭ সাল থেকে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও আধুনিক নির্মাণশৈলীতে এই ঈদগাহে বৃহৎ পরিসরে ঈদের জামাত শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে।
বিশাল এই ঈদগাহে সোমবার (১৭ জুন) খুব সকাল থেকেই সমবেত হতে শুরু করেন মুসল্লীরা। সকাল ৯টায় শুরু হয় নামাজ। এখানে ঈমামতি করেন হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমান। নামাজ শেষ দেশের অগ্রগতি, মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা, বিশেষ করে ফিলিস্তিনী জনগনের শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
বৃহৎ এই ঈদের জামাতে দিনাজপুর ও আশেপাশের জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নামাজ আদায় করতে আসেন মুসলাøীরা। অনেক দুর থেকে এসে বৃহৎ বিপুল সংখ্যক মুসল্লীর সাথে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশী তারা।
বরগুনা থেকে আসা মুসল্লী ইদ্রিস আলী জানান, শুনেছি এটি দক্ষিন এশিয়ার বৃহৎ জামাত। তাই এই জামাতে এসেছি নামাজ আদায় করতে। নিজেকে বেশ ভালো লাগছে এতবড় জামাতে একসাথে বিপুল সংখ্যক মুসল্লীর সাথে নামাজ আদায় করতে পেরে।
দিনাজপুর জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান জুয়েল বলেন, এবার স্বতস্ফুর্তভাবে মানুষ এই জামাতে এসেছে নামাজ আদায় করতে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক একরামুল হক আবির বলেন, জুলাই গণঅভুত্থানের পর প্রথম এই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলো। আলাদাভাবে বাস বা ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়নি মুসল্লীদের জন্য। কিন্তু এরপরও মুসল্লীরা স্বতস্ফুর্তভাবে এই জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করতে এসেছে। তিনি বলেন, এবার এই জামাতটি অনুষ্ঠিত হয়েছে কোন রাজনৈতিক কর্তৃত্বের উপর নয়। রাজনৈতিক উর্দ্ধে থেকে ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সকল শ্রেনীপেশার মানুষ এবার ঈদের জামাতে অংশ নিয়েছে। আর এ জন্য অতীতের চেয়ে এবার অনেক বেশী মুসল্লীর সমাগম ঘটেছে বলে জানান তিনি।
এদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে এই ঈদের জামাত সম্পন্ন হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, এই নামাজ সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সকলেই সহযোগিতা করেছেন। সুষ্ঠুভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানের জন্য দিনাজপুর পৌরসভা, পুলিশ বিভাগসহ সকল স্তরের মানুষ পরামর্শ দিয়েছেন। এ জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি। তিনি বলেন, সূর্য্যরে তাপ প্রচুর থাকায় মুসল্লীদের কিছুটা কষ্ট হয়েছে। যদিও এটি বিশাল ঈদগাহ, এরপরও আগামীতে সামিয়ানার বিষয়টি চিন্তা করা হবে। তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতায় আগামীতে বিশাল এই ঈদগাহের শোভা বর্ধনের কাজ করা হবে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন মারুফ বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে এই ঈদের জামাত সম্পন্ন করার জন্য সর্বাত্মক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। শান্তিপুর্ণভাবে নামাজ সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ঠ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
বৃহৎ এই ঈদগাহে মুসল্লীদের জন্য স্থাপন করা হয় শৌচারগার, ওজুর ব্যবস্থা। বসানো হয় মেডিক্যাল টিম। পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে নেয়া হয় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।