কিশোরগঞ্জে লাম্পি স্কীন ভাইরাসে ৩টি গরুর মৃত্যুঃ শংকায় খামারী ও কৃষক

সিএসএম তপন ,নীলফামারী:
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ল্যাম্পি স্কীন ভাইরাসে গত তিন দিনে তিনটি গরুর মৃত্যু হয়েছে। এতে কৃষক ও খামারীদের কপালে ভাজ পড়েছে লাম্পি স্কীন ভাইরাস আক্রান্ত গরু নিয়ে। কোরবানি ঈদের আগেই এই ভাইরাসটির ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে খামারী ও কৃষকরা। প্রয়োজনিয় চিকিৎসা করেও কাঙ্খিত ফল না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া মাষ্টারপাড়া গ্রামের শিক্ষক আবু লায়েছ সুজনের প্রায় ৫০ হাজার টাকা দামী একটি এঁড়ে গরু ২১ মে’২৫ তারিখে লাম্পি স্কীন ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। একই উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে মজিবর রহমান আকালুর একমাত্র সম্পদ ২টি গরু লাম্পি স্কীন ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তিনি জানান, গত ২১ মে একটি গাভী ও ২২ মে’২৫ তারিখে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা দামী একটি এঁড়ে গরু মারা গেছে। আমার একমাত্র সম্পদ ছিল গরু দুইটি।
ভাইরাস আক্রান্ত হলে গরুর গায়ে শুরুতে জ¦র, ব্যথা ও গলা ফুলে যায়। পরে গোটা গায়ে গোলাকার গুটি ও ফোস্কা উঠে। এক পর্যায় এসে গুটি গুলো ফেটে গিয়ে ক্ষত তৈরি হয়। এই রোগ এক গরু থেকে অন্য গরুর মধ্যে দ্রæত ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে দিনকেদিন আক্রান্ত গরুর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক গরু মারাও যাচ্ছে। কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কামার পাড়া গ্রামের সঞ্চয় কুমার বলেন, আমার গরুর হঠাৎ জ¦র আসে। তারপর গলায় ফোস্কা উঠে। এক পর্যায়ে ফোস্কাগুলো ফেটে গিয়ে ক্ষত তৈরি হয়। ওষুধ খাইয়ে কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না। পুটিমারী গ্রামের জ্যোতি কৃষ্ণ রায় বলেন, ওষুধ খাইয়েও একটি গরু থেকে আরেকটিতে রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে দ্রæত। চাঁদখানা ইউনিয়নের নগরবন গ্রামের বাচ্চু মিয়া বলেন, আমার দুটি বাচুর গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। চিকিৎসা করে কোন ফল পাচ্ছি না। চিকিৎসা করতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন টোটকা চিকিৎসা করছি।
খামারী মোঃ কামরুল হোসেন কাজল ভাইরাসের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এর আরো বিস্তৃতি হলে আমারা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হব। তবে বাইওে চড়ানো গরু ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে বেশী।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের তথ্যানুযায়ী এ উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার গরু রয়েছে। প্রান্তিক খামারির মোটাতাজাকরণ গরু রয়েছে সাড়ে ৪৬ হাজার। দুগ্ধজাত গরু রয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার। ঈদে কোরবানির গরুর চাহিদা রয়েছে ৩৩ হাজার। ১৩ হাজার গরু উদ্বৃত্ত থাকবে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নাহিদ সুলতান বলেন, যে সকল কৃষক বা খামারির গরু মারা যাচ্ছে এর মধ্যে ওষুধ খাওয়ানোর নিয়ম ও পদ্ধতিগত ভুলও রয়েছে।