৩ আষাঢ়, ১৪৩২ - ১৭ জুন, ২০২৫ - 17 June, 2025

" রংপুরের পীরগঞ্জে বারোমাস দুটি পয়েন্টে ভেজাল গুড় তৈরি "

2 weeks ago
51


ইক্ষুর রস ছাড়াই তৈরি হচ্ছে গুড়

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:

ইক্ষুর রসের পরিবর্তে ময়দা, চিনি, হাইড্রোজ, সোডা ও গো-খাদ্য চিটাগুড়, নালি ও চিনি দিয়ে অবৈধ ভাবে গুড় তৈরি করা হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভেজাল গুড়  তৈরি হচ্ছে বারোমাস, নেই কোন বাধা। প্রশাসনের  নজরেও রয়েছে অবৈধ এই গুড় তৈরি কারখানা এলাকাবাসীর অভিযোগ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার দূরে খালাশপীরহাট সেখান থেকে ২ কিলোমিটার উত্তরে ঠাকুদাস লক্ষিপুর (তৈলি পাড়া)  গ্রামের মৃত নুরু মিয়ার ছেলে হাফিজার রহমান আখ মৌসুমের শুরু থেকে গুড় তৈরির করে। আখের আবাদ না থাকলেও তার কারখানায় নির্বিঘ্নে তৈরি করা হয় ভেজাল গুড়। প্রশাসনের তদারকি না থাকায়  নিয়মিত সকালবিকাল গুড় তৈরি করছে। মানবদেহের ক্ষতিকর বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে চুল্লীতে আগুন দিয়ে কড়াইয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়। ২ থেকে ৩ জন শ্রমিক গুড় তৈরি করে মাটির পাত্র বা চাড়িতে মজুদ করে। নিজ এলাকায় এই গুড় সরবরাহ না করলেও অপরিচিত এলাকায় পাইকারি বাজারে আমদানি করে থাকেন তারা।

অপরদিকে পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার পথ পারি দিয়ে চতরাহাট সেখান থেকে উত্তর পশ্চিমে ৩ কিলোমিটার দূরে যাদবপুর গ্রাম। সেখানে মৃত  ইসমাইল হোসেনের ছেলে মোনাজাল হোসেন ও একই পন্থায় আখের রস ছাড়াই গুড় তৈরি করে দীর্ঘদিন থেকে। তিনিও নির্বিঘ্নে গুড় তৈরি করে বিক্রি করছে বাজারে। এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রতি সপ্তাহের সোমবার এবং বৃহস্পতিবার সকাল বিকাল এই ভেজাল গুড় তৈরি করে। গুড় তৈরির সময় বাড়ির গেট দিয়ে এ কাজ করে থাকেন। কারখানায় বহিরাগত কোন লোকজন ঢুকতে পারে না কিন্তু বাহির থেকে গুড়ের গন্ধ অনুভব করে থাকেন এলাকার লোকজন। এবিষয়ে অভিযোগ দিলেও প্রশাসনের লোকজন ব্যবস্থা গ্রহণ করে না বলে এলাকাবাসীর দাবি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানায় এক শ্রমিক জানান, খালাশপীর (তেলী পাড়া) কারখানায় নালি গুড়,চিটা গুড়, সুজি, ময়দা, পানি, চিনি এবং রং দিয়ে তৈরি করা হয় ভেজাল  গুড়। এই গুড় এলাকায় বিক্রি করা হয় না এমনকি নিজেরাও কখনো খাই না। আখ মৌসুমে এখানে আখের রস চিবিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। কৃষি মাঠে আখ বা (কুসার) না থাকলে তখন বিকল্প পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় গুড়। উপজেলা প্রশাসন এই কারখানার খোঁজখবরও নেয় না। তবে উপজেলা স্যানেটারি অফিসা তিনি নাকি এখান থেকে মাসহারা পায় তাছাড়াও এলাকাবাসীরও কোন অভিযোগ নেই, যে কারনে গুড় এই কারখানায় সকাল বিকাল তৈরি করা হয়।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, প্রশাসনের তদারকি একেবারেই নেই এই কারখানাগুলোতে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ভেজাল গুড় তৈরির জন্য উপজেলা স্যানেটারি অফিসার দায়ী। কারখানায় নোংরা পরিবেশে খালি গায়ে হাতে মুঠোয় শরীরের ঘাম দিয়েই গুড় তৈরি কাজে ব্যাস্থ শ্রমিকেরা, মসা মাছি তো লেগে আছেই  গুড়ে। যেন দেখার কেউ নেই। বর্তমানে চিনির বাজার একটু কম, চিনির সাথে ময়দা সুজি,রং,চিটা ও নালি মিশিয়ে গুড় তৈরি করেন।

এবিষয়ে কারখানার মালিকরা কোন কথা বলতে রাজি নন। বরং প্রতিবেদক দেখে পালিয়ে থাকার চেষ্টা করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্যানেটারি পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা প্রতিবেদককে বলেন, খোঁজ নিয়ে ভেজাল গুড় তৈরির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth