২৫ আষাঢ়, ১৪৩২ - ০৯ জুলাই, ২০২৫ - 09 July, 2025

রংপুরে এক বছরে পানিতে ডুবে ২শতাধিক শিশুর মৃত্যু

2 weeks ago
45


অভিভাবকদের অসচেতনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বর্তমানে চলছে বর্ষা মৌসুম। এই সময় নদ-নদীসহ বসতবাড়ির আশপাশে থাকা পুকুর, ডোবা, নালা পানিতে ভরপুর হয়ে উঠেছে। এর ফলে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে শিশুরা। প্রতিদিনই ঘটছে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে রংপুর মহানগরীসহ জেলার আট উপজেলায় এই পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল সার্জন জানিয়েছে, গত ১ বছরে দেড় শতাধিক শিশু মৃত্যু হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা ২ শতাধিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর। কারণ সব মৃত্যুর তথ্য ফায়ার সার্ভিস অথবা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হয় না।

এদিকে সচেতন মহল বলছে,অভিভাবকদের অসচেতনতা এর প্রধান কারণ। পরিবারের লোকজন সচেতন হলে এ ধরনের মৃত্যুর হার অনেক কমে যাবে।’

চিকিৎসকরা বলেন, পানিতে পড়া বেশিরভাগ শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যায়। পাঁচ মিনিটের মতো পানিতে ডুবে থাকলেই শিশুর মৃত্যু হয়। মৃত অবস্থায়ই বেশির ভাগ শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়।

জানাগেছে, গত সোমবার পীরগাছায় পৃথক স্থানে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২৭ এপ্রিল একই উপজেলার কান্দি ইউনিয়নে বাড়ির পাশে গর্তের পানিতে ডুবে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়। গত বছরের জুনে পৃথক ঘটনায় মিঠাপুকুর উপজেলায় ঘাঘট নদীতে ও পুকুরে ডুবে পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়।

রংপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত জেলার পাঁচ উপজেলায় পানিতে ডুবে ১১১ জন শিশুর মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। পানিতে পড়া যেসব শিশুকে হাসপাতালে আনা হয় তাদের মধ্যে মৃতের সংখ্যাই কেবল রেকর্ড করা হয়।

রংপুর ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বিভাগে পানিতে ডুবে নিখোঁজের সংখ্যা ৩৫ জন। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করেছে ১৯ জনকে। বাকিদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবারের লোকজনের ব্যস্ততার সময় তারা শিশুদের প্রতি অমনোযোগী হয়ে পড়লে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। শিশুরা বাড়ির উঠোনে খেলা করার সময় পরিবারের লোকজনের অগোচরে বাড়ির পাশে থাকা পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। জীবন শুরুর আগেই তাদের জীবন প্রদীপ নিভে যায়। 

রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক বলেন, ‘আগের দিনে মায়েরা তাদের সন্তানদের বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন ছিলেন। শিশুদের সার্বক্ষণিক অবস্থান জানার জন্য কোমরে ঝুনঝুনি পরিয়ে দিতেন। আধুনিক যুগের অনেক মায়েরা বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে শিশুদের সময় দিতে পারেন না। শিশুরা কোথায় যায় অভিভাবকরা জানেন না। তাই পানিসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।’

এবিষযে রংপুরের জেলা সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা জানান, পানিতে পড়া বেশির ভাগ শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যায়। আবার অনেক মৃত শিশুকে হাসপাতালে আনা হয় না। হাসপাতালে যেসব শিশুকে আনা হয় শুধু তাদের নামই রেকর্ড করা হয়। তাই এ সংখ্যা দুই শতাধিক বলে মনে করা হচ্ছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth