৩১ আষাঢ়, ১৪৩২ - ১৫ জুলাই, ২০২৫ - 15 July, 2025

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে রকমারি আবাদে স্বাবলম্বী অমল রায়

3 weeks ago
231


সিএসএম তপন,  নীলফামারী:

প্রচলিত ও ঐতিহ্যগত শস্যের পাশাপাশি নতুন নতুন শস্য চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক কৃষক। দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীও কৃষির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। আধুনিক ও সঠিক চাষ পদ্ধতি কৃষিতে সুফলও মিলছে।হাতির সুরের মত ছড়ানো ড্রাগন গাছে থোকায় থোকায় পিঙ্ক কালারের ড্রাগন ফল চোখ জুড়ে যায়। সাথি ফসল হিসাবে আদা ও বেদনার চাষ আরো মহোনীয় করে তুলেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের বগুলাগাড়ী কামারপাড়া গ্রামের  মনমোহন রায়ের ছেলে অমল রায়ের (৫১) ড্রাগন বাগন।

 প্রতি বছর ড্রাগন চাষ থেকে ভাল লাভ আসায় শ্রমিকদের পাশাপাশি নিজেই শ্রম দেন অমল রায়। দুপরের তীব্র রোদ উপেক্ষা করে বাগানে পাখী তাড়ানোর জন্য শব্দ সৃষ্টিকারী টিনের যন্ত্রে রশি লাগিয়ে টানতে দেখা যায় তাঁকে।  তার মোহনীয় বাগান যেমন মানুষের নজর কাড়ে। ক্ষুধার্ত পাখীদেরও নজর এড়ায় না। তাই দিন-রাত  পালা করে অমল রায়,শ্রমিকরা  পাখী তাড়াবার কাজে ব্যস্ত থাকেন। প্রতি বছর ড্রাগন চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।

৬০ শতক বেলে দোঁ-আশ জমিতে পিঙ্ক কালারের ড্রাগন চাষ করেছেন অমল। প্রতি বছর ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা লাভ আসে। ড্রাগনের চারা লাগানোর অনেক সময় পর ফল পাওয়ার কারণে, তিনি জমি না বাড়িয়ে ওতেই সাথি ফসল করছেন। গত কয়েক বছর বস্তায় আদা চাষ করেছিলেন।

এবারে ড্রাগন বাগানেই আদা চাষ করছেন। এখন পর্যন্ত আদায় কোন মড়ক ধরেনি। পাশাপাশি বেদনার চড়াও রোপণ করেছেন এবার। তিনি বলেন, বছরে ৫ বার ড্রাগন ফল বিক্রি করি। এর মধ্যেই ১ম রাউন্ড (১৫ মে-১৫ জুন) ফল বাজারে বিক্রি করেছি। ডিসেম্বর পর্যন্ত ড্রাগন ফল ঘরে উঠবে।

তিনি আরো বলেন, ড্রাগল ফল গ্রীষ্মকালীন ফসল। তীব্র শীতে এর মুকুল আসে না। তবে হালকা শীতে মেঘলা আকাশ ও রাতে লাইটিং পদ্ধতি ব্যবহার করলে মাঝারি ধরনের ফলন হয়। এতে খরচ পরে।

অমল বলেন, বাগানে  ক্ষতিকর কোন ঔষধ প্রয়োগ করি না। এ কারণেই পাখী ছুটে আসে আমার বাগানে।  এলাকার  মাটি ড্রাগন চাষ উপযোগী।

বিভিন্ন জেলা  শহরের পাইকাররা বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যায় আমার ড্রাগন ফল। এবারে ১ শত ৫০ টাকা থেকে ২ শত টাকায় বিক্রি করছি। ২০১৫ সালে ১০০০ হাজার  ড্রাগন চারা রোপন করি, ড্রাগন ফলের   পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের ৭০ টি আমের গাছ,ভিয়েতনামের আটা বিহিন ৬০ টি কাঁঠাল গাছ,মসলা জাতীয় ৮০ টি চারা রোপন করেছি।   এ ছাড়াও সবজিসহ আখ চাষ করি।

অমল রায় আমাদের প্রতিদিন পত্রিকা কে  বলেন, ১৯৯২ সালে এসএসসি পাশ করার পর চাষাবাদ শুরু করি । পৈত্রিকসুত্রে পাওয়া সাড়ে চার একর জমি দিয়ে চাষাবাদে সফলতার মুখ দেখি। পরে চাষাবাদের লাভে কিছু জমি নিজে কিনে, বর্গায় ও বন্দক নিয়ে আরো সাড়ে চার একর বেশি জমি চাষ করছি। কোনো ফসলে লোকসান হলেও, অন্য ফসল দিয়ে তা উসুল হয়।

নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বছর জেলায় ড্রাগন বাগান ১৫টি ছিল। বাজারে প্রচুর চাহিদা ও লাভবান ফসল হওয়ায় এবারে তা বেড়ে ৩০টি ড্রাগন ফল বাগান হয়েছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth