নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ইট বিক্রি করা শিক্ষিকাকে বাচাতে মনগড়া তদন্ত কমিটি গঠন, স্থানীয়দের তোপের মুখে তদন্তে বাঁধা

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনের ইট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।এঘটনা তদন্তের জন্য দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে তদন্তে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে ফিরে এসেছেন তদন্তকারী দুই কর্মকর্তা।
রবিবার (২৯জুন)দুপুরে উপজেলার বাহাগিলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার নাম মাহজুবা উম্মে লাবনী।
জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমোদন পেলে পুরোনো ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। ভাঙা ভবনের ইট ও অন্যান্য সামগ্রী মাঠে স্তূপ করে রাখা ছিলো। গত ২০ জুন রাতে সেখানে স্তুপ করে রাখা ইট ট্রলি গাড়ীতে করে কয়েক গাড়ী নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। পরে রাতের বেলা দুটি ট্রলি গাড়ীতে ইট নিয়ে যাচ্ছিলেন এসময়ে স্থানীয়রা তা দেখে গাড়ী আটকিয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহায়তায় ট্রলি থেকে ইট নামিয়ে রাখেন।
এবিষয়ে কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে তাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে মনগড়া একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ডা.মোসা মাহমুদা খাতুন। এ তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়কের দায়িত্বে পান উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক হোসেন ও আরেক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাহার হোসেনকে সদস্য করা হয়। তদন্ত কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদক দাখিল করতে অনুরোধ করা হয়। সে অনুযায়ী আজকে দুপুরের দিকে ঘটনায় তদন্ত করতে সরেজমিনে যান দুই তদন্তকারী কর্মকর্তা। এসময়ে এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয় আমলে না নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের ইট বিক্রি করা শিক্ষিকাকে বাঁচাতে মনগড়া তদন্ত কমিটি গঠন করায় তোপের মুখে পড়ে তদন্ত না করেই ফিরে আসেন তদন্তকারী দুই কর্মকর্তা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, মাহজুবা উম্মে লাবনী দীর্ঘদিন ধরে এখানে চাকরি করছেন। তিনি সেখানে চাকরি করার কারনে বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতির সঙ্গে জড়িত নিয়মিত স্কুলে আসেন না। সরকারি প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ ঠিকমতো করেন না ওই শিক্ষিকা। বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনের ইট বিক্রির সময়ে স্থানীয়রা ট্রলি আটকিয়ে তার সম্পৃক্ততা পান। এবিষয়ে তারা তার বিচার চেয়ে শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সে অভিযোগ আমলে না নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম ওই শিক্ষিকাকে বাচাতে মন গড়া একটি তদন্ত কমিটি দেন সেখানে শিক্ষিকার কোন সংপৃক্ততা উল্লেখ করেন নি। এজন্য তদন্ত করতে আসা দুই কর্মকর্তা স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে তদন্ত না করে ফিরে যান। নতুন করে ঔই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান স্থানীয়রা।
সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির আহবায়ক ফারুক হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটির নোটিশে শুধু চুরির কথা উল্লেখ ছিলো সেখানে শিক্ষিকার কোন কথা লেখা ছিলো না। আমরা জানি এলাকাবাসী আমাদের সহায়তা করবেন আমরা সেখানে গিয়ে কথা বলে চলে এসেছি। শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে আবার বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা মাহজুবা উম্মে লাবনীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ডা. মোসা মাহমুদা বেগম বলেন, আমাদের অফিসের একজন ছুটিতে ছিলো এখনো লিখিত অভিযোগটি আমার কাছে আসেনি সেটি আমি দেখিনি। পরে তিনি আমাকে কাগজটা দিয়েছেন তার আগে মৌখিকভাবে বিষয়টি শোনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। আজকে তদন্ত কমিটি গিয়ে সেখান থেকে ঘুরে এসেছে আমরা লিখিত অভিযোগটি দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করব।