নাগেশ্বরীতে প্রতিবেশীর টয়লেটের সেপটি ট্যাংক থেকে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার গ্রেফতার ৪

নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
নাগেশ্বরীতে নিখোঁজের পরদিন প্রতিবেশীর টয়লেটের সেফটি ট্যাংকি থেকে আট বছরের শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত শিশু মুরসালিন মিয়া (০৮) উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ছিট মালিয়ানি এলাকার মশিউর রহমান মুছা ও মনজু দম্পতির ছোট ছেলে।
অভিযুক্ত মমিনুল ইসলাম (২২) প্রতিবেশী ফরিদ উদ্দিনের ছেলে।
এ ঘটনায় শনিবার রাতেই ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় বিক্ষুব্দ জনতা আগুন ধরিয়ে দেয় অভিযুক্ত যুবক ও তার নানার বাড়িতে।
শিশুটির পরিবারের দাবী সে শিশুটিকে বলাৎকার পর হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করেছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে সে।
তারা জানায়, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুরসালিনের বাড়িতে তার বড় ভাই মিমের বিয়ের আলোচনা চলছিলো। এ সময় মমিনুল ইসলাম মুরসালিনকে একাধিকবার ডেকে পাঠায়। পরে সে এক সময় নিজে ডেকে নিয়ে তার ঘরের ভেতরে দরজা বন্ধ করে মোবাইলে ভিডিও দেখে। ধারনা করা হচ্ছে এ সময় বলাৎকার করে শিশুটিকে হত্যা করে সে। এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত মা ছেলেকে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করেন। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে মমিনুলের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে মমিনুল ও তার মা মহসেনা বেগম মুরসালিনকে দেখেনি বলে জানায়। কিছুক্ষণ পর আবারও গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা দরজায় তালা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। মমিনুলের নানা মহর উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে তারা। এক সময় বিষয়টি জানাজানি হলে মমিনুলের মা মনজু বেগম ও নানী মেহরা বেগম প্রতিবেশি নজরুল ইসলাম ও আজির রহমানের বাড়িতে আত্মগোপন করেন। এরই মধ্যে মুরসালিনকে না পেয়ে শুক্রবার এলাকায় মাইকিং করেন তার পরিবার। এ সুযোগে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত মমিনুল।
পরদিন শনিবার খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে রাত ৮টার দিকে মমিনুলের বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংকে তার লাশ দেখতে পান স্বজনরা। পরে ৯৯৯ ফোন দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। এর পরেই বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত ও তার নানার বাড়ীতে আগুন দেয়। পরে ফাযার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিস এর টিম লিডার মোফাজ্জল হোসেন জানান, দুটি বাড়ির ৩টি শয়নক্ষসহ ৫টি ঘরে আগুন লাগে। আমরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে আমরা পৌছার আগেই এসব ঘরের ভিতরে থাকা আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
লাশ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত মমিনুলের মা মহসেনা বেগম, বোন ফাহিমা খাতুন, প্রতিবেশী নজরুল ইসলাম, তার স্ত্রী মঞ্জু বেগমকে আটক করে থানায় আনে পুলিশ।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা মশিউর রহমান বাদী হয়ে শনিবার রাতেই নাগেশ্বরী থানায় আটক ৪ জনসহ ৯ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
নাগেশ্বরী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম রেজা মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটক ৪জনকে সেই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।