কুড়িগ্রামে উজানের ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে ভারত থেকে ভেসে আসছে গাছের গুঁড়ি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
উজানের ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে কুড়িগ্রামের নদনদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের থেকে আসা নদী দুধকুমার ও ব্রক্ষ্মপুত্র নদে ভেসে আসছে হাজার হাজার গাছের গুঁড়ি। স্থানীয়দের ধারণা, ভারী স্রোতে বনাঞ্চল থেকে এসব গাছ উপড়ে বা ভেসে এসেছে।
রোববার ও সোমবার ভোর রাত থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্রক্ষ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর তীরবর্তী এলাকায় বিভিন্ন স্থানে গাছের গুঁড়ি ভেসে আসতে দেখা যায়। স্থানীয়রা নৌকা ও দড়ির সাহায্যে এসব গাছ নদী থেকে টেনে তীরে তুলছেন।
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙা ও শালঝোড় এলাকায় দুধকুমার নদীর পাড়ে ও চিলমারী উপজেলার ব্রক্ষ্মপুত্র নদে ভেসে আসা গাছ সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন নদীতীরবর্তী মানুষরা।
স্থানীয়রা জানান, ভেসে আসা অধিকাংশ গাছ কেটে রাখা অবস্থায় ছিল। আবার কিছু গাছ শেকড়সহ উপড়ে এসেছে। তীব্র স্রোতে বনাঞ্চল থেকে এসব গাছ ভেসে আসতে পারে।
জানা গেছে, ভুটান থেকে জয়গা এলাকা হয়ে ভারতের হাসিমারা বনাঞ্চল (হাসিমারা ফরেস্ট) থেকে গাছগুলো ভেসে আসতে পারে। সীমান্তবর্তী ভারতীয় বাসিন্দারাও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, কালজানী নদীর উজানে হাসিমারা বনাঞ্চলে অতিবৃষ্টির কারণে পানি প্রবেশ করে তীব্র স্রোত সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে বনাঞ্চলের গাছপালা উপড়ে গিয়ে নদীতে ভেসে পড়েছে।
ভুটান ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা হয়ে কালজানী নদী থেকে। অপরদিকে আসাম থেকে গাছের গুঁড়ি ভেসে আসা চিলমারী উপজেলার ব্রক্ষ্মপুত্র নদে প্রবেশ করে।
স্থানীয় লেবু মিয়া(৫০) নুর ইসলাম (৫৬)বলেন, নদীর পানির ওপর খালি গাছ আর গাছ। মাঝে মধ্যে মরা গরুও ভেসে আসছে। মনে হচ্ছে, যেন অলৌকিক কিছু ঘটছে।
অন্যদিকে স্থানীয় ঘাটিয়াল আবু সাইদ বলেন, বিকেল ৩টার দিকে গাছগুলো ভেসে আসতে শুরু করেছে। যার যা পারছে, তুলে নিচ্ছে।
চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের শাখাহাতি এলাকার রাশেদুল ইসলাম(৫০) বলেন নদীতে গাছ ভেসে আসছে। আমিও দুইটি গাছের গুঁড়ি পেয়েছি।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, সোমবার ভোর রাতে নদীর পানিতে ভেসে আসছে অসংখ্য গাছের গুঁড়ি। যে পাচ্ছে সেই নিয়ে যাচ্ছে।
শিলখুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী বলেন, এখন নদীতে শুধু গাছ আর গাছ। লোকজন নৌকা নিয়ে গাছ ধরে আনছে। এত গাছ কোথা থেকে আসছে বোঝা যাচ্ছে না। এগুলো ভারতীয় সীমান্ত এলাকা থেকেই এসেছে।