বিদ্যালয়ের বৃক্ষ নিধন বন্ধ ও প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ ৬ দফা দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার বিহারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫৩টি মূল্যবান গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বাতিল, স্লীপ, কাবিখা এমারজেন্সি এডুকেশন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম, বিতর্কিত ম্যানেজিং কমিটি বাতিল, প্রধান শিক্ষক আকমল হোসেন অরেঞ্জকে অপসারণসহ ৬ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে নানা অভিযোগের তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করেছেন বিহারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন, বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিকুর রহমান লিটন, সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান অভিভাবক মো.আব্দুল হাই (সার্ভেয়ার)। অভিভাবক মো.খলিল মিয়া,
মো. মনিরুজ্জামান, সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বর্তমান প্রধান শিক্ষক আকমল হোসেন অরেঞ্জ বদলি হয়ে এখানে আসার পর থেকেই শিক্ষার মান নিম্নমুখী হয়েছে, শিক্ষার্থী সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। নানামুখী বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে স্কুলের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন
করেছে।
বক্তারা আরও বলেন, পীরগাছার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ম্যানেজ করে, স্কুলে কর্মরত শিক্ষক, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, পরিবেশ, সুধিজন ও শিক্ষা অফিসারকে অবগত না করে, বিদ্যালয়ের আঙ্গিনার গাছ কাটার আবেদন করেন। তাঁরই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় ১৫৩ টি গাছ নিলাম করা হয়। নিলামের পূর্বে ফরেস্টের মূল্য নির্ধারণী টিমকে প্রভাবিত করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, এতে সরকার বিশাল পরিমানের রাজস্ব হারাচ্ছে। অনতিবলম্বে প্রশাসন যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই ধরনের অপরাধ আমাদের সমাজে ক্রমশ বারতেই থাকবে।
প্রসঙ্গত: এলাকাবাসীর ৬ দফা দাবিগুলো নিম্নরূপ ১। বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক আকমল হোসেন অরেঞ্জকে প্রশাসনিকভাবে অপসারণ করতে হবে, ২। পুনরায় মূল্য নির্ধারণ করে শুধুমাত্র ইউক্যালিপ্টাস গাছ নিলাম করতে হবে, ৩। পরিবেশের অনুকুলের বা কোন বন্ধু গাছ নিলাম করা যাবে না, ৪। বিদ্যালয়ের পশ্চিমের গেটের পরিবর্তে দুই ভবনের মাঝ দিয়ে গেট করতে হবে, ৫। বিতর্কিত এডহক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন কমিটি করতে হবে, ৬। বর্তমান প্রধান শিক্ষক আকমল হোসেন এর সময়ে প্রাপ্ত স্লীপ, কাবিখা ও এমারজেন্সি এডুকেশন প্রকল্পের ব্যাপারে তদন্ত করতে হবে। মানববন্ধন শেষে পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন এলাকাবাসী।
এবিষয়ে জানতে, বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক আকমল হোসেন অরেঞ্জকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেনি।
পীরগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল হোসেন বলেন, গাছ বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই, প্রধান শিক্ষক ইউএনওর মাধ্যমে এসব করেছে। এবিষয়ে জবাব প্রধান শিক্ষকই দিবেন। তার ব্যাপারে আমি প্রাথমিক শিক্ষা কতৃপক্ষ লিখিত জানাবো।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মো. রাসেল বলেন, মানববন্ধনের বিষয়টি জেনেছি এবং এলাকাবাসীর পক্ষে থেকে স্মারকলিপি পেয়েছি। আপাতত গাছ কাটা স্থগিত করা হয়েছে, আগামী রবিবার সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।