৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ - ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ - 19 November, 2025

নীলফামারীতে আগাম জাতের আলু উঠেছেঃ দরপতনে ভাটা পরেনি আলুর চাষাবাদে

2 hours ago
13


সিএসএম তপন,  নীলফামারী:

নীলফামারীতে আগাম জাতের আলু উঠেছে। দরপতনে ভাটা পরেনি আলু চাষাবাদে। বড় অংকের লোকসান গুনেও প্রায় সমান তালে গতবারের মত আগাম আলুচাষে ধুম পরেছে। আগামের পাশাপাশি মাঝারী পর্যায়ের আলুচাষেও থেমে নেই কৃষকরা। এ পর্যায়ে দরপতনের শঙ্কা থাকলেও আলুচাষে পিছিয়ে নেই কৃষকরা। তাদের আশা, যদি এ বছর নতুন আলুর ভাল দাম পাওয়া যায়; তাহলে উসুল হবে অতীতের লোকসান।

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মঞ্জুর রহমান  জানিয়েছেন, কিশোরগঞ্জ উপজেলার কেশবা গ্রামের মোঃ সোরহাব হোসেন ১৭ নভেম্বর তার ৫৯ শতক জমিতে মাত্র ৫৫ দিনে ৩৫০ কেজি বিনা সেভেন জাতের আলু তুলেছেন। সাইজে ছোট  হওয়ার কারণে ৪০ টাকা দরে আলু বিক্রি করেন। তিনি বলেন, দেশের মধ্যে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় প্রথম আলু তোলা হয়। আগামী ১ সপ্তাহ পরেই এই এলাকায় আলু তোলা পুরোদমে শুরু হবে। এলাকার কৃষিজীবিরা কখনো আশাহত হয় না। একবার লোকসান গুনলেও পরের বার আরো উদ্যোম নিয়ে আলু চাষাবাদ করে থাকেন। প্রতিবারেই আগাম জাতের আলু চাষ করে ভাল দাম পায় কৃষক। এ কারণেই আগাম আলুচাষে হাল ছাড়েন না। আলুর দাম কম থাকার কারণে অন্যান্য সব্জির দাম স্থিতিশীল আছে। বর্তমান পুরোনো খাবার আলু ১০ থেকে ১৫ টাকায় মিলছে বাজারে। বীজ আলুর দামও প্রায় সমান।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই মুশরুত পানিয়ালপুকুর এলাকার আল-আমিন ৭০ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করেছেন। তার আলুর বয়স ৫০ থেকে ৩৫ দিন। সব ক্ষেতের আলুর দাম সমান পাবেন না। দর নিয়ে মনে অজানা শঙ্কা থাকলেও লাভের আশায় তিনি স্বপ্ন বুনছেন।

লোকসানের মুখে থাকা কিশোরগঞ্জ যদুমনি এলাকার বড় ধরণের চাষী লুৎফর রহমান লুতু মিয়া। তিনি হিমাগারে প্রায় ছয় হাজার বস্তা আলু রেখেছিলেন। প্রায় ৪০ লাখ টাকা লোকসানে তিনি হিমসিম খাচ্ছেন। লাভের আশায় ১৩ বিঘা উঁচু জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করেছেন। বিপুল পরিমানের লোকসান গুনেও তিনি এবারও ৩০ বিঘা জমিতে বীজ আলু চাষাবাদ করবেন বলে জানিয়েছেন।

জেলার বিভিন্ন মাঠে ঘুরে দেখা গেছে, দুর্গা পুজার আগে হালকা বৃষ্টিতে আলু ক্ষেত ভিজে গেলেও তেমন মরক ধরেনি আলুতে। বলা চলে আগাম আলুর জন্য আবহাওয়া অনুকুলে। আশানুরূপ ফলন পাবে কৃষকরা। কোন ঝঞ্ঝাট ছাড়া বাজারজাত করতে পারলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে। দাম পেলে আশার সঞ্চার হবে। এমন স্বপ্ন নিয়ে দিন গুনছেন সবাই। আমন ধান উঠোনে না তুললেও, ওই জমিতেই বীজ আলু রোপণের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলছেন অনেকেই। কৃষকদের ঘড়ে ঘড়ে আলু বীজ শোভাবর্ধণ করছে। ১৫ থেকে ২০ দিনের গঁজানো বীজ রোপণ করলে তা ৫০ দিনেই হিমাগারে বীজের জন্য রাখতে পারবেন বলে কৃষকরা জানান।

কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, গত বছর ২৩ হাজার ১ শত ৫৬ হেক্টর জমিতে            আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এবারে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। জেলার ১১টি হিমাগারে ৪ হাজার ২ শত ৫০ মেট্রিক টন খাবার আলু হিমাগারে মজুত রয়েছে। বীজ আলু রয়েছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এছাড়াও জেলার বাইরে অনেক হিমাগারে জেলার কৃষকদের আলু সংরক্ষিত রয়েছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth