সমাবর্তনের রঙে রাঙা রাবি: অর্ধলাখ মানুষের মিলনমেলায় চলছে জাঁকজমকপূর্ণ দ্বাদশ সমাবর্তন
রাবি সংবাদদাতা:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তন আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে শুরু হয়েছে। সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই আয়োজনকে রাবির ইতিহাসের অন্যতম জাঁকজমকপূর্ণ সমাবর্তন হিসেবে অভিহিত করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দ্বাদশ এই সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারীরা; ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের স্নাতকোত্তর, এমবিবিএস, বিডিএস ও ডিভিএম ডিগ্রি অর্জনকারীরা; পাশাপাশি ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এমফিল, এমডি ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারী গ্র্যাজুয়েটসহ মোট ৫ হাজার ৩৪৮ জন শিক্ষার্থী। গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে তাদের পরিবার, স্বজন ও বর্তমান শিক্ষার্থী মিলিয়ে প্রায় অর্ধলাখ মানুষের উপস্থিতিতে পুরো ক্যাম্পাস পরিণত হয়েছে এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায়।
সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম ফায়েজ।
সমাবর্তন নির্বিঘ্ন করতে ক্যাম্পাসজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে কঠোর ও বহুস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, সেনাবাহিনী, ডিজিএফআই, ডিএসবি, এসএসএফ ও এনএসআইয়ের সমন্বয়ে পুরো ক্যাম্পাসকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের যাতায়াত সহজ করতে সকাল ৬টা থেকে শহরের নির্ধারিত পয়েন্ট থেকে ১৫টি বাস ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছে। অনুষ্ঠান শেষে এসব বাস আবার শহরে ফিরে যাবে। এছাড়া এক নম্বর গেট এলাকা থেকে চালু রয়েছে শাটল বাস সার্ভিস, যেখানে অভিভাবকরাও চলাচল করতে পারবেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে শাটল বাস ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে না।
সমাবর্তনে অংশ নেওয়া সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬–১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী উম্মে সালমা নিঝুম বলেন, “সমাবর্তন অ্যাকাডেমিক জীবনের এক সুন্দর পরিসমাপ্তি। দীর্ঘ সাত বছর পর রাবিতে সমাবর্তন হচ্ছে। আজ পেছনে তাকালে মনে হয় প্রথম দিনের সেই অচেনা ক্যাম্পাস, নতুন বন্ধু, সবকিছুই এখন মধুর স্মৃতি। কল্পনায় বহুবার দেখা এই দিনটি আজ বাস্তবে ধরা দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারাটা অন্যরকম অনুভূতি।”
নিঝুমের মা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “আজ আমার খুব ভালো লাগছে। মেয়ে তার পড়াশোনা শেষ করে এই দিনটি পেয়েছে। ক্যাম্পাসে এসে অনেক আনন্দ পাচ্ছি।”
ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১২–১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জহিরুল খান বলেন, “রাবির দ্বাদশ সমাবর্তনে এসে আবেগ ধরে রাখা কঠিন। যৌবনের যে সময়টা বন্ধুদের সঙ্গে কাটিয়েছি, আজ তাদের সঙ্গেই আবার দেখা—এটা জীবনের একটি বিশেষ দিন।”
দুপুর ১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে শুরু হবে মূল সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।