৮ পৌষ, ১৪৩২ - ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ - 22 December, 2025

রাবিতে শিক্ষকদের অবমাননা ও ‘মবোক্রেসি’র অভিযোগ: উপাচার্যের কাছে ক্ষোভ বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের

4 hours ago
14


রাবি সংবাদদাতা:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষকদের অবমাননা, ক্যাম্পাসে মব সৃষ্টির অভিযোগ এবং সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপিপন্থি শিক্ষক সংগঠনগুলো। এসব বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, জিয়া পরিষদ ও ইউট্যাবের নেতৃবৃন্দ। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে তারা তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।

এ সময় জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা উপাচার্যের সঙ্গে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। জুলাই বিপ্লবের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও তথাকথিত জুলাই বিরোধী শিক্ষকদের বিষয়ে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এর সুযোগে কিছু ছাত্র প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সমাজকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে মবোক্রেসির মাধ্যমে সম্মানহানি করছে—এটা আমরা মেনে নিতে পারি না।”

তিনি আরও বলেন, “যদি কোনো শিক্ষক অপরাধী হন, তবে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে—এই দাবিই আমরা জানিয়েছি।”

নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর ভাষ্য, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তার নিয়োগে যোগ্যতার বিষয়টি মানা হয়নি। এমবিবিএস ডিগ্রিধারীরা সেখানে আবেদন করার সুযোগ পাননি। এছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।”

এদিকে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম বলেন,

“বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ফ্যাক্ট চেকিং’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হলেও তারা এখনো কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। এর ফলে রাকসুর ছাত্র প্রতিনিধিরা বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে শিক্ষকদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এতে ক্যাম্পাসে ভয় ও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অনেক শিক্ষক লাঞ্ছনার আশঙ্কায় ক্লাসে যেতে পারছেন না।”

দ্রুত পরিস্থিতির সমাধান না হলে আন্দোলনের কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।

উল্লেখ্য, রোববার ছয়টি অনুষদের আওয়ামীপন্থি ডিনদের পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচি পালন করেন রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। সকাল থেকে রাকসু ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তিনি একে একে ডিনদের ফোন করেন এবং গণমাধ্যমের সামনে তাঁদের উদ্দেশ্যে লেখা পদত্যাগপত্র প্রকাশ করেন। একই দিন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার ক্লাস নিচ্ছেন—এমন তথ্য পেয়ে তাঁর বিভাগেও যান তিনি।

তবে দুপুরে তাঁকে না পেয়ে শিক্ষার্থীরা ডিনস কমপ্লেক্স ভবনে আইন, ব্যবসায় শিক্ষা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের তিন ডিনের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। তাঁরা হলেন—আইন অনুষদের অধ্যাপক আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক এ এস এম কামরুজ্জামান এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্ল্যাহ।

অন্যদিকে আওয়ামীপন্থী বাকি তিন ডিন হলেন—বিজ্ঞান অনুষদের নাসিমা আখতার, প্রকৌশল অনুষদের বিমল কুমার প্রামাণিক এবং ভূবিজ্ঞান অনুষদের এ এইচ এম সেলিম রেজা।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে রোববার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব আওয়ামীপন্থী ডিনদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় ডিনরা রুটিন দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth