১১ পৌষ, ১৪৩২ - ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ - 25 December, 2025

নীলফামারীতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বাড়ছে শীত

23 hours ago
12


নীলফামারী প্রতিনিধিঃ

নীলফামারীতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ঘন কুয়াশা ও হিমালয় থেকে বয়ে আসা বরফছোঁয়া হিমেল বাতাসে জনজীবনে নেমে এসেছে কনকনে শীত। অনেক জায়গায় কুয়াশা যেন তুষারপাতের মতো অনুভূত হচ্ছে। একদিনের ব্যবধানে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমেছে ৫ ডিগ্রি এবং নীলফামারীতে কমেছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।পৌষের এই তীব্র ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় ইরি–বোরো ধানের চারা ও বিভিন্ন শীতকালীন ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষ। শীতের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে; তবে গরম কাপড় বিক্রেতাদের মুখে দেখা গেছে স্বস্তির হাসি। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম কাপড়ের দামও কয়েকগুণ বেড়েছে। সারাদিন ঘন কুয়াশার কারণে সড়কপথে যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।এত শীতের কারণ সম্পর্কে সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হাকিম জানান, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে শীতের অনুভূতি বাড়ে এবং এই পার্থক্য ৫ ডিগ্রির নিচে নামলে শীত প্রকট হয়ে ওঠে। বুধবার ঠিক সেই পরিস্থিতিই বিরাজ করছে। তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলের ছয়টি আবহাওয়া স্টেশনেই তাপমাত্রা কমেছে। মঙ্গলবার তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২১.৭ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস; বুধবার তা নেমে এসেছে যথাক্রমে ১৬.৫ ও ১১.৬ ডিগ্রিতে। একইভাবে নীলফামারীর ডিমলায় মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ ডিগ্রি, যা বুধবার কমে ১৮ ডিগ্রিতে নেমেছে; সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও প্রায় ১ ডিগ্রি কমেছে। এতে দিন–রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান কমে গিয়ে শীত আরও বেড়েছে।সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কাছাকাছি চলে আসায় ঘন কুয়াশা, দিনের তাপমাত্রা হ্রাস এবং ঠান্ডা বাতাস মিলিয়ে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। জলীয় বাষ্প উপরে উঠতে না পারায় শিশিরে ভেজা মাটি শুকানোর সুযোগ পাচ্ছে না। মাঝেমধ্যে সূর্যের দেখা মিললেও তেমন উষ্ণতা নেই। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শীত আরও বাড়ে, কমে যায় পথচারীর সংখ্যাও।

কনকনে শীতে অনেকেই সকালে কাজে বের হতে পারছেন না। শীত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। নীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা এলাকার ইসহাক আলী বলেন, “এত ঠান্ডা যে সকালে কাজে বের হতে কষ্ট হয়। কাজ না করলে সংসার চলে না, আবার ঠান্ডায় কাজ করাও কঠিন।” ডিমলা উপজেলার তিস্তা চরের কৃষক মোজাম্মেল মিয়া বলেন, “কুয়াশায় সামনে কিছুই দেখা যায় না, হিমেল বাতাস বেশি কাবু করে দিচ্ছে।শীত নিবারণের জন্য জেলার হকার্স মার্কেটগুলোতে গরম কাপড় কিনতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ভিড় বাড়ছে। একই সঙ্গে শীতের প্রকোপে হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে; আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি। ডিমলা উপজেলার কর্মকর্তা আব্দুস সবুর মিয়া জানান, মহানন্দা ও তিস্তা নদী এবং হিমালয় পর্বত কাছাকাছি হওয়ায় উত্তর–পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা হিমেল হাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে এবং সামনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth