১৯ আশ্বিন, ১৪৩১ - ০৪ অক্টোবর, ২০২৪ - 04 October, 2024

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চিকিৎসা সংকটে বুলেট বাবু মিয়া

আমাদের প্রতিদিন
3 weeks ago
40


নিজস্ব প্রতিবেদক:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ বাবু মিয়া(৬০) । পেশায় তিনি সবজি ব্যবসায়ী। সবজির োকানে আয় দিয়ে র্সসার চলত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৯ জুলাই শুক্রবার গুলিবিদ্ধ হন বাবু মিয়া। এর পর থেকে পায়ের ক্ষত নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি নিজ বাড়িতে আছেন।

অর্থাভাবে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না হওয়ায় তিনি পঙ্গুত্ব বরণ করতে চলছেন। এখন নিজের ও পরিবারের অজানা ভবিষ্যত নিয়ে তার দিন কাটছে।

রংপুর মহানগরীর জুম্মাপাড়া এলাকার বাসিন্দা বাবু মিয়া। এখনো তার পায়ের ভেতরে একাধিক রাবার বুলেটের ষ্পিস্নন্টার রয়েছে। পায়ের ক্ষতস্থানে সংক্রমন বেড়েছে। দিনভর স্ত্রী, ছেলে, ছেলের বউয়েরা সেবা দিয়ে আসছেন আহত বাবু মিয়াকে।

বর্তমানে হাঁটা—চলা করতে পারছেন। অন্যের  কাঁধে ভর করে হাঁটাহাঁটির চেষ্টা করছেন। সবজি ব্যবসার উপর ভর করে যে বাবুর সংসার চলতো তা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। আর্থিক সংকটে তার চিকিৎসা হচ্ছে না বলে বাবু মিয়া জানান।

গত ১৯ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুর সিটি বাজার এলাকায় পুলিশের সাথে ছাত্র—জনতার সংঘর্ষ হয়। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে ছাত্র—জনতার দফায় দফায় ধাওয়া—পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলে। ছাত্র—জনতাদের দমাতে পুলিশ এপিসি থেকে গুলি ছোড়ে এবং ছোররা গুলি, রাবার বুলেটসহ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।

উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি করে দোকান বন্ধ করেন সিটি বাজারের সবজি বিক্রেতা বাবু মিয়া। এ সময় তিনি হঠাৎ পায়ে আঘাত অনুভব করেন এবং দেখেন পা থেকে রক্ত ঝড়ছে। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে তিনি পায়ে ব্যাথা নিয়েই দৌড়ে পালিয়ে যান। এরপর বাবু মিয়া বাসায় এসে দেখতে পান তার পায়ে গুলি লেগেছে। পরদিন তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসক তার পা থেকে দুটি স্পিস্নন্টার বের করে দিয়ে ওষুধ লিখে দেন। বাবু মিয়ার পায়ের গভীরে আরও কয়েকটি বুলেট রয়েছে, যা বড় ধরণের অস্ত্রপচারের মাধ্যমে অপসারণ করা সম্ভব বলে চিকিৎসক জানান।

হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পর দীর্ঘ প্র্রায় ৪৬ দিন ধরে বিছানায় শুয়ে দিন কাটছে বাবু মিয়ার। পরিবারের সদস্যরা এলাকার কিছু বিত্তবানদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে বাবু মিয়াকে ওষুধ কিনে খাওয়াচ্ছে।

বাবু মিয়ার ছেলে আশরাফুল হোসেন বলেন, বাবার পা থেকে দুইটা গুলি বের করা হয়েছে। বাকীগুলো পায়ের বেশি ভেতরে থাকায় চিকিৎসকরা বের করেনি। মেডিকেল থেকে বলছিল যেসব ওষুধ লেখা হয়েছে সেগুলো খেলে গুলিগুলো পা থেকে বের হয়ে যাবে। কিন্তু গুলি তো বের হয়নি বরং এখন পায়ের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন বাহিরে বাবার অস্ত্রপাচার করলে ক্ষত ভার হয়ে যাবে। কিন্তু এ চিকিৎসা বয়বহুল হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ—পরিচালক ডাঃ আ.ম আখতারুজ্জামান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় সবাই সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এর পরও কোন আহত ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হলে তাকে সাধ্য অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth