শহীদ দিবসে ফুল তুলতে গিয়ে শিশু ধর্ষণ ধর্ষককে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে উত্তাল রংপুর

৫ সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল, মহাসড়ক অবরোধ
মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
শহীদ দিবসে ফুল তুলতে গিয়ে চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক রুহুল আমিনকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তাকে দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ভূমিহীন সংগঠন, জাতীয় নাগরিক কমিটি, নিজেরা করি, মানবাধিকার কমিশন ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার দুপুরে তারা মিঠাপুকুর ওভারপাস হতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক ও উপজেলা পরিষদ প্রদক্ষিণ করে গড়েরমাথা নামক স্থনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক ও ফুলবাড়ী-রংপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে। এসময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। সেখানে বক্তব্য রাখেন আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
এসময় তারা বলেন, ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ ধর্ষক রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ধর্ষকের পরিবার রাজনৈতিক ভাবে শক্তিশালি ও প্রভাবশালী। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির মাধ্যমে লিয়াজু করছেন। তারা আরও বলেন, ধর্ষক রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করতে না পারলে মিঠাপুকুর অচল করে দেওয়া হবে। বিক্ষোভ মিছিলে রক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির রংপুর জেলার মূখ্য সংগঠক শেখ রেজওয়ান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা সদস্য সচিব আশফাক আহমেদ জামিল, মিঠাপুকুর সমন্বয়ক মিথিলা সিনথীয়া শিলা, মুনতাসিম বিল্লাহ, সুজন মিয়া, মিঠাপুকর ছাত্রদলের সদস্য সচিব হাসান মাহমুদ, মানবাধিকার নেতা আশিকুর রহমান প্রমুখ।
পরে মিঠাপুকুর থানায় গিয়ে তারা ধর্ষককে দ্রুত গ্রেফতার করতে পুলিশ প্রশাসনকে আলটিমেটাম দেন। এছাড়াও রংপুর টাউন হলের সামনে ধর্ষককে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারন শিক্ষার্থীরা। এরআগে শুক্রবার সন্ধ্যায় ধর্ষক রুহুল আমিনকে গ্রেফতারের দাবিতে উপজেলা ওভারপাসের নিচে বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। পরদিন শনিবার সন্ধ্যায় সাধারন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বৈরাতিহাট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মিঠাপুকুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ধর্ষককে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। শুধু পুলিশ প্রশাসন নয়, অনেক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। আশাকরি দ্রুত গ্রেফতার হবে।উপজেলা নির্বাহি অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ধর্ষককে গ্রেফতারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। দ্রুতই গ্রেফতার হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষক রুহুল আমিন জামায়াতের ইসলামীর রাজনীতির সাথে জড়িত। তার স্ত্রী মোজাহিদা বেগম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর রুকন। তার ভাতিজা এড. মিজানুর রহমান মির্জাপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আইন বিষয়ক সম্পাদক। এরই প্রভাবে তারা ধর্ষণের শিকার ওই পরিবারকে মামলা করতে বাধা দিয়েছিল। এখন মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ধর্ষণের শিকার ওই শিশুটির পরিবার। এড. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা প্রভাব খাটালেতো মামলা রেকর্ডই হতো না। আমরা কাউকে হুমকি দিচ্ছিনা।
উল্লেখ্য, ২১ ফেব্রুয়ারী শহীদ দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল তুলতে গিয়ে মিঠাপুকুরের রতিয়া গ্রামের রুহুল আমিন কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। পরে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীকে চিকিৎসা ও মামলা না করতে বাধা দেয় ধর্ষকের পরিবার। পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুকে উদ্ধার ও মামলা হয়েছে। এরপর হতে পলাতক রয়েছে ধর্ষক রুহুল আমিন।