বদরগঞ্জে মালচিং পদ্ধতিতে শসা ও টমেটো চাষ

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের বদরগঞ্জে মালচিং পদ্ধতিতে শসা ও টমেটো চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন চাষী শহিদুল ইসলাম। উপজেলার কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে তিনি কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে বাণিজ্যিকভাবে দেশীয় পদ্ধতিতে শসা ও টমেটোর চাষ করেছেন। এতে খরচ বাদ দিয়েও লাখ টাকা উপার্জন হবে বলে আশাবাদী তিনি।
চাষী শহিদুল ইসলাম উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের তালুকদার দামোদরপুর ব্যাংকডুবি এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে। জানা যায়, ইউটিউবে ভিডিও দেখে দেখে তিনি প্রথমে ৪৫ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে শসার চাষ শুরু করেন। পরে আরো ৩০ শতাংশ জমিতেও শষা চাষ করেন।
শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ১৩৫ শতাংশ জমিতে জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে শসা আবাদ করতে জমি ইজারা, পরিচর্যা, সেচ, বীজসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। চারা রোপণের পর থেকে দেড় মাসের মধ্যে জমিতে শসার ভালো ফলন আসে। বর্তমানে একদিন পর পর ৩৫ থেকে ৪০ মণ শসা বিক্রি করছেন তিনি। বাজারে শসার ভালো চাহিদা থাকায় পাইকারি দরে এক মণ শসা ১ হাজার থেকে ১২শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২ লাখ ৪০ হাজার টাকার শসা বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমান বাজার দর একটু কম হলেও ফলন ভালো থাকলে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। এতে খরচ বাদে ৪০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় হবে বলে আশাবাদী শহিদুল।
বাঁশের খুঁটি, নাইলন সুতা আর জিআই তার দিয়ে চারদিকে মাঁচা তৈরি করা হয়েছে শহিদুলের শসা ক্ষেতে। ছোট বড় অসংখ্য শসা মাচায় ঝুলে আছে। পাশের ১৫ শতাংশ জমির মাচাতে রয়েছে টমেটো। নতুন করে আরো ৪০ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে শসা ও ঝিঙ্গে লাগিয়েছেন তিনি।
মালচিং পদ্ধতি কীভাবে করতে হয় সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, মালচিং পদ্ধতিতে প্রথমে জমিতে পরিমিত জৈব সার দিয়ে সারি সারি বেড তৈরি করা হয়। সেই সাথে মাটির উপর একটি সুরক্ষামূলক স্তর স্থাপন করা হয়। পরে প্লাস্টিক শিট বা জৈব পদার্থ ব্যবহার করে মাটিকে ঢেকে রেখে সারিবদ্ধ বেডগুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। বেডে নির্দিষ্ট দূরত্বে পলিথিন ফুটো করে বীজ বা চারা রোপণ করতে হয়। চাষের শুরুতে শহিদুল ফসলের ফলন নিয়ে চিন্তিত থাকলেও স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা, পরামর্শ ও নিজের পরিচর্যায় উৎপাদনে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি বলেও তিনি জানান।
বদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজ সাংবাদিকদের বলেন, মালচিং পদ্ধতি চাষিদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এতে সেচ কম লাগে, রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম হয়। আগাছা নিধনেও কাজ করে।