লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর আতঙ্কে কৃষক

“ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে অসংখ্য গরু”
পীরগঞ্জ রংপুর প্রতিনিধি:
লাম্পি স্কিন ডিজিজ এ আক্রান্ত হয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে অসংখ্য গরু মারা যাচ্ছে। লাম্পির হাত থেকে মুক্তি চায় কৃষি। এখানে প্রতিদিন নতুন নতুন করে আক্রান্তের হাড় বাড়ছে। ফলে হতাশায় ভুগছেন গবাদিপশুর মালিকরা। পল্লী অঞ্চলের কৃষকরা সারাবছর ধরে ঋণ নিয়ে ফসলের চাষাবাদ করে থাকে। আর সেই ঋণের বোঝা হালকা করে গবাদিপশু। এখানে অনেকই চাষাবাদের পাশাপাশি গরু পালন করে থাকে। কেউ কেউ আবার গরুর উপর নির্ভর করে চলে। এলাকার প্রায় গোয়াল ঘরেই ভাইরাস বোকার জন্য ছুঁইছুঁই করছে।
উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১৫ টি ইউনিয়নে লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পরেছে। এ রোগের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না অল্প বয়সের বাছুর এবং স্বাস্থ্যবান গরু। চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে শতশত গরু উপজেলা প্রাণীসম্পাদ অফিসের লোকজন মাঠ পর্যায়ে দেখা মিলছে না কৃষকদের অভিযোগ। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এলাকার ভুক্তভোগী কৃষক।
উপজেলার জামালপুর গ্রামের মিজানুর রহমান, সবদেল মিয়া, বাবু মিয়া, ইউনুস আলী, আতোয়ার রহমান, সমসেল মিয়া, আশরাফুল ইসলাম, মুকুল মিয়া,বাদশা মিয়া,সোলাইমান আলী একটি করে গরু ১ সপ্তাহের মধ্যে মারা গেছে। এছাড়াও কৃষ্ণুপুর গ্রামের রিপন মিয়া, জাকির মিয়া,মতিয়ার, রাশিদুল মিয়া এবং চতরা সুন্দরপুর গ্রামের হাবিল, সোনাতলা গ্রামের নওশাদ আলী, হোসেনপুর গ্রামের মমসের আলীরও একটি করে গরু মারা গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দাবি করছেন গ্রামের পশু চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসার কারণে অনেক গরু মারা যাচ্ছে।
সচেতন মহলের লোকজনরা বলছেন, গত বছর এই রোগের আক্রমণে শত-শত গরু মারা গেছে, সেই ব্যাথাই শেষ হয়নি। আবারও ঘুরে এলো সেই ভাইরাস। বাংলাদেশ সরকার এই রোগের জন্য গুরুত্ব না দিলে গরু মালিকদের হতাশায় দিন কাটবে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ এতোটাই ভয়াবহ কোন ঔষধ তোয়াক্কা করে না। ভালো গরু সন্ধ্যায় গোয়াল ঘরে উঠানো হয় সকালে গিয়ে দেখা যায় সমস্ত শরীরে ফুলা এবং খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটে। ফুলে যাওয়া স্থানগুলো কয়েকদিন পরে চামরা উঠিয়ে যায় এবং ক্ষতস্থান থেকে পুঁজ বা রক্ত বেড় হয়।
গরু ব্যবসায়ী মমিন,সব্দেল ও শামিম মিয়া বলেন, আমরা গ্রাম থেকে গরু কিনে হাটে বিক্রি করি। এতে উভয়ের লাভ এখন গ্রামে গরু কেনা অনেকটাই কমে গেছে। কারন ভাইরাস এ আক্রান্ত গরু বোঝা যায় না। সেই কারনে গরুর বাজার অনেকটাই কম। তারা আরও বলেন, গরু গ্রাম থেকে কিনে হাটে নিয়ে যাই হঠাৎ করে বাছুর মার যায় এতে প্রায় ২০ হইতে ৩০ হাজার টাকা লোকসান। যে কারনে অনেক গরু ব্যবসায়ী ব্যাবসা বাদ দিয়ে বসে আছেন।
ভুক্তভোগী কৃষকরা বলছেন, লাম্পি স্কিনের হাতুড়ি মার্কা কিছু চিকিৎসক রয়েছে তারা সাধারণ মানুষ কে বোকা বানিয়ে গরুর দুই পাশে ইঞ্জেকশন পুশ করে টাকা হাতিয়ে নেয়। লাম্পি নিয়ে মহাবিপদে রয়েছে গরুর মালিকরা।
তারা আরও বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কোন চিকিৎসক গ্রামে দেখা যায় না। সরকারের বেতন ভাতা খায় আর অফিসে বসে দিন পার করে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস পল্লী অঞ্চলের কৃষকের কোন কাজে আসছে না বলে তারা দাবি করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিস্পদ কর্মকর্তা ডা. ফজলুল কবির এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, লাম্পি স্কিন রোগের চিকিৎসার জন্য সরকার কাজ করছে এবং এ রোগের ভ্যাকসিন হাতে পেতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ নিয়ে আমরা সাধারণত খামারিদের কে পরামর্শ দিয়ে আসছি।