১০ আশ্বিন, ১৪৩২ - ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ - 25 September, 2025

টানা বৃষ্টিতে রংপুরে সবজির দাম দ্বিগুণ মাঠে ফসল তলিয়ে বিপাকে কৃষক, বাজারে চাপে ক্রেতা-বিক্রেতা

1 week ago
58


টানা বৃষ্টিতে রংপুরে সবজির দাম দ্বিগুণ মাঠে ফসল তলিয়ে বিপাকে কৃষক, বাজারে চাপে ক্রেতা-বিক্রেতা
টানা বৃষ্টিতে রংপুরে সবজির দাম দ্বিগুণ মাঠে ফসল তলিয়ে বিপাকে কৃষক, বাজারে চাপে ক্রেতা-বিক্রেতা

 

রংপুর প্রতিনিধি:

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রংপুরের সবজির বাজারে নেমেছে অস্থিরতা। ভারী বর্ষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে শত শত বিঘা জমির সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে খুচরা বাজারে। ফলে একদিকে ক্রেতারা চড়া দামে সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, অন্যদিকে কৃষক ও বিক্রেতারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। বাজারে সবজির দাম আকাশছোঁয়া রংপুর নগরীর সিটি বাজার, জিএল রায় রোড, মাহিগঞ্জ ও সাথমাথা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

 

স্কুল শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন “যে লাউ কয়েকদিন আগেও ৩০ টাকায় কিনতাম, এখন তা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুন, টমেটো, শিম সবকিছুর দামই আকাশছোঁয়া। এখন সবজি কেনা যেন বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।” আরেক ক্রেতা, গৃহিণী সায়মা বেগম বলেন “আগে যেখানে ৫০০ টাকায় এক সপ্তাহের সবজি কিনতে পারতাম, এখন একই পরিমাণ কিনতে লাগছে প্রায় ১ হাজার টাকা। সীমিত আয়ের মানুষের জন্য সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।”

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, তারা লাভে নেই বরং নিজেরাই ক্ষতির মুখে পড়ছেন। একজন বিক্রেতা জানান “বৃষ্টির কারণে মোকামে সবজি আসছে কম। যে পরিমাণ আসছে, তার দাম অনেক বেশি। আমরা যদি বেশি দামে কিনি, তাহলে বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু এতে ক্রেতা কমে গেছে, বিক্রি কমে গেছে।” আরেক বিক্রেতা অভিযোগ করেন“অনেক সবজি বৃষ্টির কারণে পচে যাচ্ছে। ফলে আমাদেরও লোকসান গুনতে হচ্ছে।” সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের কৃষক আবদুল করিম বলেন, দুই বিঘা জমিতে শসা, করলা, ঝিঙার চাষ করেছিলাম। সব পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গাছ পচে নষ্ট হচ্ছে। যা কিছু ছিল, তা-ও বাজারে পাঠানো যাচ্ছে না। এবার ফলনের অর্ধেকও পাব না। সারা বছরের পরিশ্রম আর বিনিয়োগ সব জলে গেল। আরেক কৃষক জানান বাজারে দাম বাড়লেও আমাদের কোনো লাভ নেই। মাঠেই তো কিছু নেই, কী বিক্রি করব?সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত, বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় ক্রেতারা বিপাকে এবং বিক্রেতারাও লোকসানের মুখে। এ অবস্থায় বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

 

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “টানা বৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সবজি ক্ষেত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে নিচু এলাকার জমিতে জলাবদ্ধতা বেশি। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করছি। তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।” তিনি আরও জানান, কৃষকদের বিকল্প ফসল চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি কিছুটা হলেও কমানো যায়।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth