১৩ আশ্বিন, ১৪৩২ - ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ - 28 September, 2025

কুড়িগ্রামে চর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবি নদী ভাঙ্গা মানুষের

1 hour ago
12


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে ব্রহ্মপুত্র তিস্তা ধরলা দুধকুমার সহ ১৬ টি নদনদীতে ৩৩ টি পয়েন্টে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙ্গনে বাবা কোথায় যাবে, মা কোথায় যাবে, শৈশবের বন্ধু সেও হারিয়ে যাবে। বাবা মায়ের কবর সিটিও নদীতে চলে গেছে। নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে সহায় সম্বল হারিয়ে কুড়িগ্রামের কয়েক  হাজার মানুষ দিশেহারা। ভাঙ্গনে দিশেহারা মানুষ বাঁচার তাগিদে দিনমজুর, রিকশা চালিয়ে জীবনধারণ করতে বেশ কষ্ট পাচ্ছেন। যারা ধনী ছিল তাদেরও সহ সম্বল হারিয়ে লজ্জার কারণে দূর দূরান্তে রিক্সা চালিয়ে জীবন যাপন করছে। কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নের ছাঁট কালুয়া এলাকার বাসিন্দা মজিবর (৬২), সালেহা খাতুন (৫৫) সোনাউল্লা (৬২) সাত থেকে আট বার নদী ভাঙ্গনে শিকার হয়ে এখন রাস্তার ভিখারীর মত হাত পাতিয়ে জীবন ধারণ করছে। শুধু সারোডোব  নয়, ফুলবাড়ির গোরকমন্ডপ, পশ্চিম ধনিরাম, সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের বানিয়ে পাড়া, ঘোগাদহ ইউনিয়নের খারুয়ারপাড়, রৌমারী উপজেলা  শৌলমারী ইউনিয়নের  সুখের বাতি, উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট সহ অনেক এলাকায় নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব হচ্ছে। তাদের এই দুঃখ দুর্দশা লাগোবে কুড়িগ্রাম জেলা উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন পরিষদ মানববন্ধন সমাবেশ করে যাচ্ছে।

কুড়িগ্রামে জেলা উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে রোববার সকালে কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গনের শিকার ছাঁট কালুয়া এলাকায় হাজার হাজার নারী পুরুষ মানববন্ধন ও সমাবেশ করে। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু'র সভাপতিত্রাবে  বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুখ, কুড়িগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু বকর সিদ্দিক, সংগঠনের সহ-সভাপতি স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক  পরিচালক ডাক্তার শাহাদত হোসেন, সহ-সভাপতি জহরুল আলম, সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ওমর মজিদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ওহাব মন্ডল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রকিবুল হাসান বাঁধন, যুব  সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম হ্যাভেন, সদস্য ইমরুল হাসান সাজন, ছাত্র নেতা হামিদুল ইসলাম প্রমূখ।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু বলেন, কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর ভাঙ্গন দীর্ঘদিন থেকে চলছে। বিশেষকরে ১৯৫৪ সাল থেকে নদীর ভাঙ্গন ব্যাপকহারে ভাঙছে।এই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।ভাঙনে কুড়িগ্রাম জেলায় অসংখ্য চরের সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্তে জানাগেছে, জেলায় ৪৬৯টি চরের মধ্যে ২৬৯ চরে মানুষের বসবাস। চরের মানুষের জীবন মান উন্নয়ন না হওয়া, শিক্ষা, স্বাস্থ্য চিকিৎসাসহ নানান সমস্যার কারণে কুড়িগ্রাম জেলা দারিদ্র্যের দিক থেকে ৬৪জেলার মধ্যে ৬৪তম অবস্থানে রয়েছে। বাল্যবিবাহের কারণে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৯১ হাজার ৬৭২জন।

এছাড়াও নদী ভাঙ্গা মানুষের কোন পরিসংখ্যান কোন দপ্তরে নেই। এছাড়া নদী ভাঙ্গা মানুষকে আশ্রয়ের জন্য এক শতাংশ জমি ও ঘর তৈরি করে দেয়ার নজির নেই। নদী ভাঙ্গা মানুষের খবর কেউ রাখে না।তাছাড়া নদী ভাঙ্গনে সামাজিক বন্ধন নষ্ট হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতো চর বিষয়ক মন্ত্রণালয় করে কুড়িগ্রামের দারিদ্র্য বিমোচন করার দাবি জানান।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth