শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপের প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপের প্রতিবাদে কুড়িগ্রাম জেলাজুড়ে সোমবার (১৩ অক্টোবর) দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করেছে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা । জেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় সকাল থেকে পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষকরা এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। বেসরকারি শিক্ষকদের সংগঠন সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ কুড়িগ্রাম জেলা শাখা এই কর্মসূচির ডাক দেন।
গত রোবাবার (১২ অক্টোবর) রাতে তারা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন শিক্ষক নেতা মুকুল মিয়া, আসাদুজ্জামান সরকার ও রাশেদুজ্জামান তাওহীদ।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের রিভার ভিউ হাই স্কুল, কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কালেক্টরেট হাই স্কুল এন্ড কলেজ, খলিলগগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজ, কুড়িগ্রাম আলিয়া কামিল মাদ্রাসা, যাএাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,
আদর্শ হাই স্কুল, এমএ সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়, নীলারাম হাই স্কুল, বেলগাছা বরকতিয়া হাই স্কুলে সকাল ১০টা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠানে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেন।
এসময় তারা বলেন, শিক্ষকরা দেশের ভবিষ্যৎ তারা আদর্শ ও নৈতিকতা সম্পন্ন জাতি গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের ওপর নির্যাতন করা লজ্জাজনক ও অমানবিক। তারা শিক্ষক নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এব্যাপারে কথা হলে সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সমন্বয়ক রাশেদুজ্জামান তাওহীদ জানান,
শিক্ষক নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে আমাদের সমস্ত শিক্ষক সমাজকে অপমানিত করা হয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণসহ, সকল সার্বিক ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া না হবে আমরা আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবো।
জেলা শাখার অপর সমন্বয়ক মুকুল মিয়া বলেন, অবিলম্বে শিক্ষক নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরে যাবোনা।
এবিষয়ে যাএাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কাসেম রনি বলেন
আমাদের ২০% বাড়ি ভাড়া ও ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দিতে সরকারের এত গড়িমসি আর সহ্য করবোনা।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি পত্র-পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়া জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে আমার নিজস্ব কোন বক্তব্য নেই। আমরা চাই তারা ক্লাস নিবেন, সরকার সময় মত যতটা পারে তাঁদের দাবি দাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
কর্মবিরতির কারণে জেলার শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা গিয়েছে। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমরা একই পাঠ্যপুস্তক, সিলেবাস ও একই বোর্ডের অধীনে সনদপত্র অর্জন করি। অথচ আমাদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য এটা মেনে নেয়া যায়না।
আমরাও চাই আমাদের শিক্ষকদের দাবি মেনে নিয়ে তাদেরকে ক্লাসে ফিরিয়ে আনা হোক। দীর্ঘদিন এরকম চলতে থাকলে আমাদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে। আমার ক্লাসে ফিরে যেতে চাই, পাঠদান চাই।