ধানখেতে পড়ে ছিল তরুণের লাশ, পাশে রক্তমাখা টি-শার্ট
আঃ রহিম, পাগলাপীর রংপুর:
রংপুরে ধানখেত থেকে এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে গঙ্গাচড়া থানার বিনোদন কেন্দ্র ভিন্নজগতের পাশে খলেয়া ইউনিয়নের লালচাঁদপুর নয়াপাড়া এলাকার ধানখেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর এক বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত আবু সিয়াম (১৯) একই এলাকার আলতাব হোসেনের ছেলে। তিনি ভিন্নজগতে ফ্রিল্যান্সিং আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে তাঁর মামার ইট-বালুর ব্যবসা দেখাশোনা করেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে এক ব্যক্তি ভিন্নজগৎ এলাকার ক্যানেলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার মাঝে রক্ত ভেজা মাটি দেখতে পায়। এ সময় তিনি চারপাশে তাকাতেই দেখেন রাস্তার পার্শ্ববর্তী একটি ধানখেতে একজনের মরদেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে ধানখেত থেকে সিয়ামের লাশ উদ্বারের পর ঘটনাস্থলে আলামত সংগ্রহ করেন রংপুর সিআইডির কমকতারা ও পুলিশ। লাশে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ সময় লাশের পাশে একটি ভাঙা চাকু এবং একটি রক্তমাখা টি-শার্ট আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। নিহত সিয়ামের বাড়িতে গেলে দেখা যায় বাড়ির উঠানে বিলাপ করছেন মা সাদেকা বেগম। এ সময় তিনি বলছিলেন, ‘ওরে মোর সোনার বাবারে তুই মোক ছাড়ি কোনটে গেলুরে। মোর সোনার বাবাটা যদি কারো কেনো ক্ষতি করি থাকে তাইলে মোক আসি কইলেন না কেনে, মোর বাবার জন্যে না হয় মুই মোর এই জানটা কোরবানি করি দিনুং হয়। নিহত সিয়ামের ভাগিনা সোহাগ (১৯) আমাদের প্রতিদিন পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল রোববার সন্ধ্যায় আমি আর মামা একসঙ্গে ভিন্নজগৎ হয়ে পাগলাপীর যাওয়া কথা ছিল। অর্ধেক রাস্তা যেতেই মামার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে, এরপর আমি আর মামা পাগলাপীর না গিয়ে ভিন্নজগৎ এর দিকে ফিরে আসি। সোহাগ আরও বলেন, ভিন্নজগৎ এলাকায় (লাশ উদ্ধারের ঘটনাস্থল) আসার পর আমোকে রেখ একটু দুরে গিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে মামা কথা বলেন। অন্ধকার ও একটু দুরত্ব থাকায় তাকে দেখতে পাননি। এরপর তারা নানা বাড়ি গিয়ে রাতে খাবার খেয়ে আবার বের হন। একপর্যায়ে তার মামা তাকে বলেন, মোবাইল ফোনে চার্জ নাই। বাড়ি গিয়ে চার্জার নিয়ে আসবেন। এরপর তার মামা আর ফেরেনি। রাতে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান বলেন, লাশের গলায় ছুরির কয়েকটি খত পাওয়া গেছে। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, ছুরিকাঘাতে রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।