ভালো নেই গঙ্গাচড়ার বাঁশ শিল্পের কারিগররা
নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় রয়েছে বিভিন্ন জাতির বসবাস। এ উপজেলায় এখনো কিছু পরিবার বাঁশ শিল্পের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে দিন দিন বাঁশ শিল্পের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা। জীবন জীবিকার তাগিদে তবুও বাবা-দাদার এই পেশাকে এখনো ধরে রেখেছে কিছু সংখ্যক পরিবার।
এ উপজেলা থেকে ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ শিল্প। বাঁশের তৈরি পণ্যের কদর আর তেমন নেই বললেই চলে। ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এই শিল্পটি। এক সময় গ্রামীণ জনপদের মানুষ গৃহস্থলি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করলেও, এখন বিলুপ্তির পথে এ শিল্পটি।
এরপরেও উপজেলার গুটি কয়েক পরিবারের মানুষ ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। বর্তমানে স্বল্প দামে হাতের নাগালে প্লাস্টিক সামগ্রী পাওয়ায় বাঁশ শিল্পের চাহিদা আর তেমন নেই। এখন আর আগের মতো বাড়ির আশেপাশে বাঁশ রাখছে না কেউ। সেগুলো কেটে চাষাবাদসহ বাড়ি তৈরি করছে মানুষ।
এখন আর যেখানে সেখানে দেখা মেলে না বাঁশ ঝাঁড়। তাছাড়াও প্লাস্টিক ও অন্যান্য দ্রব্যের পণ্য টেকসই ও স্বল্পমূল্যে পাওয়ায় সাধারণ মানুষের চোখ এখন সেগুলোর ওপর। জানা যায়, এক সময় দেশের বিস্তীর্ণ জনপদে বাঁশ দিয়ে তৈরি হতো গৃহস্থালী ও সৌখিন পণ্যসামগ্রী। বাড়ির পাশের ঝাঁড় থেকে তরতাজা বাঁশ কেটে তৈরি করতেন হরেক রকমের পণ্য। এসব নিজেদের ব্যবহারের পাশাপাশি, বাজারে বিক্রি করে চলতো তাদের জীবন- যাপন।
তবে এখনো গ্রামের অনেক বাড়িতেই বাঁশের তৈরি ডালা, ঝুড়ি, কুলা, চাটাই চোখে পড়ে।
উপজেলার বেতগাড়ী বাজারের পাশেই বসবাস করা বাঁশ শিল্পের কারিগর খোকন (৪৫), বুদা (৩২), রমেশ (২৮) বলেন, বর্তমানে হাতে গোনা কিছু সংখ্যক পরিবার এ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছেন। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেলেও পূর্ব পুরুষের হাতেখড়ি এই পেশাকে কিছুতেই ছাড়তে পারেননি তারা। প্রতিদিন তাদের তৈরি কিছু পণ্য বেতগাড়ী বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়। যা বিক্রি হয় তা দিয়ে খাবার কিনে বাড়ি ফেরেন তারা। এভাবেই তাদের জীবন-জীবিকা চলে। বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূলের দাম বেশি হওয়ায়, স্বল্প আয়ের এ পেশায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান তারা।