মুক্তিযোদ্ধা দম্পতির রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার
তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের তারাগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে এক মুক্তিযোদ্ধা দম্পতির রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (৭ডিসেম্বর) উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রহিমাপুর চাকলা গ্রাম থেকে দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন বীরমুক্তিযোদ্ধ, উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সহ সভাপতি ও রহিমাপুর বীরমুক্তিযোদ্ধা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৮) ও তার স্ত্রী সুবর্না রায় পুস্প (৬৩)।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ওই দম্পতির বড় ছেলে সুভেন রায় পুলিশের এ এস আই হিসাবে জয়পুরহাটে ও ছোট্ট ছেলে রাজেশ খান্না রায় পুলিশের সদস্য হিসাবে ঢাকা কর্মরত থাকায় তারা পরিবার নিয়ে নিজ নিজ স্থানে থাকেন। এ কারনে দীর্ঘদিন থেকে বীরমুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী সুর্বনা রায় পুস্প রহিমাপুরের চাকলার গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন। ওই দম্পতিকে দেখাশোনার কাজ করেন একই গ্রামের নৃপেন রায় ও তার ছেলে দিপক রায়।
বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক নৃপেন ও তার ছেলে দিপক রায় জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে যোগেশ রায়ের বাড়িতে তাদের দেখাশোনাসহ কাজকর্ম করেন। একারনে প্রতিদিন সকাল ৭টার পরেই তার বাড়িতে এসে কি কাজ করতে হবে তা জেনে নেন। রবিবার সকালে যোগেশ রায়ের জমি থেকে ধান নিয়ে এসে দিপক রায় তাদের উঠানে স্তুপ করে দেখেন বাড়ি থেকে কেউ বের হয়নি। পরে বাড়ির গেটে সমন্ধন করে ডাকেন। কিন্তু কোন সারা শব্দ না পেয়ে তার সন্দেহ হয়। পরে নৃপেন রায় ও তার ছেলে দিপক গ্রামের বিমল রায়কে ডেকে এরপর মই দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে তাদের শোয়ার ঘরে গিয়ে দেখতে পান কেউ নেই। পরে ডাইনিং রুমের দরজা খুলে যোগেশ রায়ের ও রান্না ঘরে মেঝেতে তার স্ত্রী সুর্বনা রায়ের রক্তাক্ত অবস্থায় মরদেহ দেখতে পান। বীরমুক্তিযোদ্ধা যোগেশ রায় কুর্শা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার, উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সদস্য ও রহিমাপুর বীরমুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। তিনি ২০১৭ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ থেকে অবসার গ্রহন করেন। রবিবার সকালে ওই দম্পতির হত্যার ঘটনায় খবর পেয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে তার পরিচিত লোকজনসহ মুক্তিযোদ্ধারা ছুটে আসেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও বর্তমান আহবায়ক আলী হোসেন বলেন, বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধাসহ তার স্ত্রীকে যখম করে হত্যার খবর আমাদের কাছে বার্তাটি খুবেই নির্মম। আমরা এই হত্যা কান্ডের সুষ্ঠ বিচার সহ মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপত্তার দাবী জানাই।