গুডবাই ফুলকপি, প্রতিদিন কমছে সবজির দাম
" হাতবদল হলেই কেজিতে ১০ টাকা লাভ "
আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ রংপুর:
সবজি নিয়ে চিন্তার ভাজ চাষিদের কপালে। চাষাবাদের খরচের হিসাব বাদ এখন রংপুরের পীরগঞ্জে কৃষি পল্লীতে ফুলকপি চাষিদের বোঝা। হাটবাজারে বিক্রেতা আছে, ক্রেতা নেই তাও আবার মন হিসাবে নয় বস্তা হিসাবে বিক্রি। ৮০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে এই কপি বস্তা। ভোর বেলায় জমি থেকে বস্তা সাজিয়ে হাটে গিয়ে অধীর আগ্রহে বসে থাকেন চাষিরা কখন বিক্রি হবে এই কপি। বেলা গড়িয়ে গেলেও ক্রেতাদের চাহিদা নেই কপির বাজারে। শেষ বেলায় এসে কপির সাথে বস্তাও ফ্রী। করার বা বলার কিছুই নেই, মৌসুমেই ফুলকপিসহ সকল সবজি রয়েছে অনাদরে। লাভ লসের হিসাব নেই মাঠ খালি বা ফাকা করতে মহা চিন্তায় রয়েছে চাষিরা। কথাগুলো বলছেন, উপজেলার ফুলকপি চাষিরা।
চাষিরা বলছেন, এবছর লসের ঘানি টানতে হবে সকল সবজি চাষিদের। সবজির বাজারে নতুন ফসল আসতে না আসতেই হাটবাজারে আমদানি প্রচুর পরিমাণ বেড়েছে সেই হিসাবে আগ্রহ নেই ক্রেতাদের । ফুলকপি, বাঁধা কপি,আলু,টমেটো, সিম,বেগুন, মিষ্টি কদু, লাউ, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজসহ সকল সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। দাম কম হলেও সকল সবজির চাহিদা রয়েছে পাইকারি বাজারে কিন্তু ফুলকপি কোন চাহিদা নেই। যে কারনে চাষিরা মাঠ ফাকা করা নিয়ে ব্যস্থা হয়ে পড়েছে।
উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের আমাদের প্রতিবেদক আজাদুল ইসলাম আজাদ জানান, ১০ শতাংশ জমিতে সবজি মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে ফুলকপির চাষাবাদ করেন। ফলন ভালো হলেও ক্রেতাদের চাহিদা নেই বাজারে তিনি মাঠ ফাকা করা নিয়ে কঠিন চিন্তায়। প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ করে ২ হাজার টাকার কপি বিক্রি করেছে তিনি। ফলে সবজি চাষে তার নেই কোন আগ্রহ। আর কখনো এই কপি চাষাবাদ করবেন না তিনি। সেই কারনে তিনি ফুলকপি বিক্রি শেষে গুডবাই জানান।
একই এলাকার হবিবার রহমান, এমামুল হক,নুরুন্নবী মিয়া,এমদাদুল হক,রানু মিয়া জানান, আবাদিরা লাভ লসের কথা হিসাব করেন না। গত কয়েকবছরের মধ্যে এবার হঠাৎ করে সবজির বাজার পানিতে পড়েছে। বীজ খরচের হিসাবও মিলছে না। হাটবাজারে পাকা মালের দাম ঊর্ধ্বগতি শুধু দাম নেই চাষিদের কাচামালের। এভাবেই যদি বছর পার হয় তাহলে চাষিরা লোকসানের বোঝা নিয়ে মহা চিন্তায় রয়ে যাবে।
সচেতন মহলে লোকজনরা বলছেন, কৃষকের কাছ থেকে শুধু হাতবদল হলেই কেজিতে ১০ টাকা লাভ। খুচরা বিক্রেতাদের কোনো লস নেই। কৃষি প্রধান বাংলাদেশ এদেশের চাষিদের নিয়ে আগে ভাবতে হবে। কৃষি খাতে সকল প্রকারের সহযোগিতা দিতে হবে সরকার কে। কৃষকরা চড়া দামে সার কীটনাশক ও বীজ কিনে আবাদ করে। সেই আবাদের কাচামাল বিক্রি করে লোকসানের বোঝা টানতে হয়। কৃষি কাজের সকল মালামালের দাম কমাতে হবে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজনরা বলছেন, কৃষি পল্লীতে কাচামালের উৎপাদন বেড়েছে যে কারনে সবজির বাজার কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমের শেষে চাষিরা একসাথে সকল ফসলের চাষাবাদ করছে। উপজেলার হাটবাজার গুলোতে কাচামালের আমদানির বেড়েছে তবে দুই এক সপ্তাহের মধ্যেই ফুলকপিসহ সকল সবজির চাহিদা বা দাম বাড়বে।